To view a copy of the CC BY-SA 4.0 license visit
http://creativecommons.org/licenses/by-sa/4.0/
গালাতীয়দের প্রতি প্রেরিত পৌলের চিঠি।
11পৌল, খ্রীষ্টের একজন প্রেরিত, এই প্রেরিত পদ কোন মানুষের কাছ থেকে বা কোন মানুষের মাধ্যমেও নয়, কিন্তু যীশু খ্রীষ্ট এবং পিতা ঈশ্বর যিনি মৃতদের মধ্যে থেকে তাঁকে উঠিয়েছেন তাঁদের মাধ্যমেই পেয়েছি, 2এবং আমার সঙ্গে সব ভাইয়েরা, গালাতিয়া প্রদেশের মণ্ডলীদের প্রতি।3আমাদের পিতা ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন। 4তিনি আমাদের পাপের জন্য নিজেকে প্রদান করলেন, যেন আমাদের ঈশ্বরও পিতার ইচ্ছা অনুসারে আমাদেরকে এই উপস্থিত মন্দ যুগ থেকে উদ্ধার করেন। 5যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে ঈশ্বরের মহিমা হোক। আমেন।6আমি অবাক হচ্ছি যে, খ্রীষ্টের অনুগ্রহে যিনি তোমাদেরকে আহ্বান করেছেন, তোমরা এত তাড়াতাড়ি তা থেকে অন্য সুসমাচারের দিকে ফিরে যাচ্ছ। 7তা অন্য কোনো সুসমাচার না; কেবল এমন কিছু লোক আছে, যারা তোমাদেরকে অস্থির এবং খ্রীষ্টের সুসমাচার বিকৃত করতে চায়।8কিন্তু আমরা তোমাদের কাছে যে সুসমাচার প্রচার করেছি, তা ছাড়া অন্য সুসমাচার যদি কেউ প্রচার করে আমরাই করি, কিংবা স্বর্গ থেকে আসা কোনো দূত করুক- তবে সে শাপগ্রস্ত হোক। 9আমরা আগে যেমন বলেছি এবং এখন আমি আবার বলছি, “তোমরা যা গ্রহণ করেছ, তা ছাড়া অন্য কোনো সুসমাচার যদি কেউ তোমাদের কাছে প্রচার করে, তবে সে শাপগ্রস্ত হোক।” 10এখন আমি কার অনুগ্রহ পাওয়ার চেষ্টা করছি মানুষের না ঈশ্বরের ? আমি কি মানুষকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছি ? যদি এখনও মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতাম, তবে খ্রীষ্টের দাস হতাম না।11কারণ, হে ভাইয়েরা, আমার মাধ্যমে যে সুসমাচার প্রচারিত হয়েছে, তার বিষয়ে তোমাদেরকে জানাচ্ছি যে, তা মানুষের মতানুযায়ী না। 12আমি মানুষের কাছ থেকে তা গ্রহণও করিনি এবং শিক্ষাও পাইনি; কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশের মাধ্যমেই পেয়েছি।13তোমরা তো যিহুদী ধর্মে আমার আগের আচার ব্যবহারের কথা শুনেছ; আমি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে অতি তাড়না ও বিধ্বস্ত করতাম; 14আমি পরম্পরাগত পৈতৃক রীতিনীতি পালনে খুব উদ্যোগী হওয়াতে আমার স্বজাতীয় সমবয়স্ক অনেক লোক অপেক্ষা যিহুদী ধর্মে আগে আগে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।15কিন্তু ঈশ্বর, যিনি আমাকে আমার মায়ের গর্ভ থেকে পৃথক্ করেছেন এবং নিজের অনুগ্রহের মাধ্যমে আহ্বান করেছেন, 16তিনি নিজের পুত্রকে আমাতে প্রকাশ করবার ইচ্ছা করলেন, যেন আমি অযিহুদীদের মধ্যে তাঁর বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করি, তখন আমি একবারের জন্যও রক্ত ও মাংসের সাথে পরামর্শ করলাম না। 17এবং যিরূশালেমে আমার আগের প্রেরিতদের কাছে গেলাম না, কিন্তু আরব দেশে চলে গেলাম, পরে দম্মেশক শহরে ফিরে আসলাম।18তারপর তিন বছর পরে আমি কৈফার সাথে পরিচিত হবার জন্যে যিরূশালেমে গেলাম এবং পনেরো দিন তাঁর কাছে থাকলাম। 19কিন্তু প্রেরিতদের মধ্যে অন্য কাউকেও দেখলাম না, কেবল প্রভুর ভাই যাকোবকে দেখলাম। 20এই যে সব কথা তোমাদের লিখছি, দেখ, ঈশ্বরের সামনে বলছি, আমি মিথ্যা বলছি না।21তারপর আমি সুরিয়ার ও কিলিকিয়ার অঞ্চলে গেলাম। 22আর তখনও আমি যিহূদীয়া প্রদেশের খ্রীষ্টিয় মণ্ডলীগুলির সঙ্গে চাক্ষুষ পরিচিত ছিলাম না। 23তারা শুধু শুনতে পেয়েছিল, “যে ব্যক্তি আগে আমাদেরকে তাড়না করত, সে এখন সেই বিশ্বাস বিষয়ক সুসমাচার প্রচার করছে, যে আগে বিনাশ করত;” 24এইজন্য তারা আমার কারণে ঈশ্বরের গৌরব করতে লাগল।
21তারপরে চোদ্দ বছর পরে আমি বার্ণবার সাথে আবার যিরূশালেমে গেলাম, তীতকেও সঙ্গে নিলাম। 2আমি সেখানে গিয়েছিলাম কারণ এটি ঈশ্বরের সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল। এবং যে সুসমাচার অইহূদিদের মধ্যে প্রচার করছি, লোকদের কাছে তার বর্ণনা করলাম, কিন্তু যারা গন্যমান্য, তাঁদের কাছে গোপনে করলাম, দেখা যায় যে আমি বৃথা দৌড়াচ্ছি, বা দৌড়িয়েছি।3এমনকি, তীত, যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, তিনি গ্রীক হলেও তাঁকে ত্বকচ্ছেদ স্বীকার করতে বাধ্য করা গেল না। 4গোপনভাবে আসা কয়েক জন ভণ্ড ভাইয়ের জন্য এই রকম হল; খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের যে স্বাধীনতা আছে, তার দোষ ধরবার জন্য তারা গোপনে প্রবেশ করেছিল, যেন আমাদেরকে দাস বানিয়ে রাখতে পারে। 5কিন্তু আমরা এক মুহূর্তও তাদের বশবর্ত্তী হলাম না, যেন সুসমাচারের সত্য তোমাদের কাছে অপরিবর্তনীয় থাকে।6আর যাঁরা গন্যমান্য বলে খ্যাত তাদের কোনো অবদান নেই আমার কাছে। তাঁরা যাই হোন না কেন, এতে আমার কিছু এসে যায় না। মানুষের বিচারকে ঈশ্বর গ্রহণ করেন না। 7বরং, তারা যখন দেখলেন অচ্ছিন্নত্বক ইহুদিদের মধ্যে আমাকে যেমন বিশ্বাস করে সুসমাচার প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তেমনি ছিন্নত্বক ইহুদিদের মধ্যে পিতরকে দেওয়া হয়েছে। 8কারণ ঈশ্বর, যিনি পিতরকে ছিন্নত্বকদের কাছে প্রেরিতত্ত্বের জন্য কাজ সম্পন্ন করছিলেন, তেমনি তিনি অইহূদিদের কাছেও আমার মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করছেন।9যখন তাঁরা বুঝতে পারল যে সেই অনুগ্রহ আমাকে দেওয়া হয়েছে, তখন যাকোব, কৈফা এবং যোহন যাঁরা নেতারূপে চিহ্নিত, তারা আমাকে ও বার্ণবাকে সহভাগীতার ডান হাত দিলেন, যেন আমরা অইহূদিদের কাছে যাই, আর তাঁরা ছিন্নত্বকদের কাছে যান; 10তারা কেবল চাইলেন যেন আমরা দরিদ্রদের স্মরণ করি; আর সেটাই করতে আমিও আগ্রহী ছিলাম;11কিন্তু কৈফা যখন আন্তিয়খিয়ায় আসলেন, তখন আমি মুখের উপরেই তাঁর প্রতিরোধ করলাম, কারণ তিনি দোষী হয়েছিলেন। 12যাকোবের কাছ থেকে কয়েকজন লোক আসবার আগে কৈফা অইহূদিয়দের সাথে খাওয়া দাওয়া করতেন, কিন্তু যখন এই লোকেরা আসল, তখন তিনি যারা ছিন্নত্বক দাবি করত তাদের ভয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করেদিলেন এবং নিজেকে অইহূদিয়দের থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে লাগলেন।13আর কৈফার ভণ্ডামির সাথে অন্য সব ইহূদি বিশ্বাসিরাও যুক্ত হল, এমনকি, বার্ণাবাও তাঁদের ভণ্ডামিতে আকর্ষিত হলেন। 14কিন্তু, আমি যখন দেখলাম, তারা সুসমাচারের সত্য অনুসারে চলছেন না, তখন আমি সবার সামনে কৈফাকে বললাম, “তুমি নিজে ইহূদি হয়ে যদি ইহূদিদের মত না, কিন্তু অইহূদিদের মত জীবনযাপন কর, তবে কেন অইহূদিদেরকে ইহূদিদের মত আচরণ করতে বাধ্য করছ?”15আমরা জন্মসূত্রে ইহূদি, আমরা অইহূদিয় পাপী নই; 16বুঝেছি যে কেউই ব্যবস্থার কাজের মাধ্যমে নয়, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ ধার্মিক বলে চিহ্নিত হয়। সেইজন্য আমরাও খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসী হয়েছি, যেন ব্যবস্থার কাজের জন্য নয়, কিন্তু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের জন্যই ধার্মিক বলে গনিত হই; কারণ ব্যবস্থার কাজের জন্য কোন শরীর ধার্মিক বলে গনিত হবে না।17কিন্তু যদি,আমরা খ্রীষ্টে ধার্মিক বলে গণ্য হবার চেষ্টা করতে গিয়ে, আমরাও পাপী বলে প্রমাণ হয়ে থাকি, তবে তার জন্য খ্রীষ্টও কি পাপের দাস? একেবারেই না! 18কারণ আমি যে নিয়ম ভেজ্ঞে ফেলেছি, তাই যদি আবার পুনরায় গেঁথে তুলি, তবে নিজেকেই অপরাধী বলে দাঁড় করাই। 19কারণ আমি তো নিয়মের মাধ্যমে নিয়মের উদ্দেশ্যে মরেছি, যেন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত থাকতে পারি।20খ্রীষ্টের সাথে আমি ক্রুশারোপিত হয়েছি, আমি আর জীবিত না, কিন্তু খ্রীষ্টই আমার মধ্যে জীবিত আছেন। আমার শরীরে এখন যে জীবন আছে, তা আমি ঈশ্বরের পুত্রের উপরে বিশ্বাসেই যাপন করছি; তিনিই আমাকে ভালবাসলেন এবং আমার জন্য নিজেকে প্রদান করলেন। 21আমি ঈশ্বরের অনুগ্রহ অস্বীকার করি না; কারণ নিয়মের মাধ্যমে যদি ধার্মিকতা হয়, তাহলে খ্রীষ্ট অকারণে মারা গেলেন!
31হে নির্বোধ গালাতীয়েরা, কে তোমাদেরকে মুগ্ধ করল? তোমাদেরই চোখের সামনেই কি যীশু খ্রীষ্ট ক্রুশারোপিত বলে বর্ণিত হয়নি? 2আমি শুধুমাত্র এই কথা তোমাদের কাছে জানতে চাই: তোমরা কি ব্যবস্থার কাজের মাধ্যমে পবিত্র আত্মাকে পেয়েছ? না বিশ্বাসের সুসমাচার শ্রবণের মাধ্যমে? 3তোমরা কি এতই নির্বোধ? পবিত্র আত্মাতে শুরু করে এখন কি মাংসে শেষ করতে যাচ্ছ ?4তোমরা এত দুঃখ কি বৃথাই ভোগ করেছ, যদি প্রকৃত পক্ষে তা বৃথাই হয়ে থাকে ? 5অতএব, যিনি তোমাদের পবিত্র আত্মা জুগিয়ে দেন ও তোমাদের মধ্যে আশ্চর্য্য কাজ সম্পন্ন করেন, তিনি কি ব্যবস্থার কাজের জন্য তা করেন? না বিশ্বাসের সুসমাচার শ্রবণের জন্য?6যেমন অব্রাহাম, “ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন, আর সেটাই তাঁর পক্ষে ধার্মিকতা বলে গণ্য হল।” 7অতএব জেনো, যারা বিশ্বাস করে, তারাই অব্রাহামের সন্তান। 8আর বিশ্বাসের জন্য ঈশ্বর অইহূদিদেরকে ধার্মিক বলে চিহ্নিত করেন, শাস্ত্র এটা আগে দেখে অব্রাহামের কাছে আগেই সুসমাচার প্রচার করেছিল, যথা, “তোমার থেকে সমস্ত জাতি আশীর্বাদ পাবে।” 9অতএব বিশ্বাসী ব্যক্তি, যারা অব্রাহামের সাথে বিশ্বাস করেছেন তারাও আশীর্বাদ পায়।10বাস্তবিক যারা নিয়মের কার্য্য অনুযায়ী চলে, তারা সবাই অভিশাপের অধীন, কারণ লেখা আছে, “যে কেউ নিয়মগ্রন্থে লেখা সব কথা পালন করে না, এবং তাতে স্থির না থাকে, সে শাপগ্রস্ত।” 11কিন্তু নিয়ম পালনের মাধ্যমে কেউই ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক বলে গনিত হয় না, এটা সুস্পষ্ট, কারণ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাসের জন্যই বেঁচে থাকবে।” 12কিন্তু নিয়ম বিশ্বাসমূলক না, বরং “যে কেউ এই সকল পালন করে, সে তাতে বেঁচে থাকবে।”13খ্রীষ্টই মূল্য দিয়ে আমাদেরকে নিয়মের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছেন, কারণ তিনি আমাদের জন্যে শাপস্বরূপ হলেন; যেমন পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “যাকে ক্রুশে টাঙ্গান যায়, সে শাপগ্রস্ত।” 14যেন অব্রাহামের পাওয়া আশীর্বাদ খ্রীষ্ট যীশুতে অইহূদিদের প্রতি আসে, যাতে আমরাও বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রতিজ্ঞার আত্মাকে পাই।15হে ভাইয়েরা, আমাকে মানুষের মত করে কথা বলতে দাও। একবার আইন দ্বারা মানুষের তৈরী একটি চুক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে, কেউই এটিকে একপাশে রাখতে বা এতে কিছু যুক্ত করতে পারে না। 16ভাল, অব্রাহামের প্রতি ও তাঁর বংশের প্রতি প্রতিজ্ঞা সকল বলা হয়েছিল। এটি বহুবচনে ‘বংশধরদের প্রতি’ আর বলে না, বরং একবচনে বলেন, “আর তোমার বংশের প্রতি,” সেই বংশ খ্রীষ্ট।17এখন আমি যা বলছি তা হল এই, যে চুক্তি ঈশ্বরের থেকে আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, চারশো ত্রিশ বছর পরে আসা নিয়ম সেই প্রতিজ্ঞাকে উঠিয়ে দিতে পারে না, যা প্রতিজ্ঞাকে বিফল করবে। 18কারণ উত্তরাধিকার যদি আইনের মাধ্যমে আসে, তবে আর প্রতিজ্ঞামূলক হতে পারে না; কিন্তু ঈশ্বর অবাধে অব্রাহামকে একটি প্রতিজ্ঞার মাধ্যমেই তা দিয়েছিলেন।19তাহলে এই আইনের উদ্দেশ্য কি ছিল? অপরাধের কারণে তা যোগ করা হয়েছিল, যে পর্যন্ত না সেই বংশ আসে, যাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল এবং সেই আদেশ দূতদের মাধ্যমে একজন মধ্যস্থের হাতে বিধিবদ্ধ হল। 20এখন এক মধ্যস্থকারী শুধু এক জনের মধ্যস্থ হয় না, কিন্তু ঈশ্বর এক।21তবে আইন কি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার পরিপন্থী ? একেবারেই নয়! কারণ যদি এমন নিয়ম দেওয়া হত, যা জীবন দান করতে পারে, তবে ধার্মিকতা অবশ্যই আইনের দ্বারা আসত। 22কিন্তু শাস্ত্র সবকিছুকে পাপের অধীনে আটক করে রেখেছিল, যাতে যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে যারা বিশ্বাস করে তাদেরকে সেই প্রতিজ্ঞা করা যায়।23কিন্তু খ্রীষ্টে বিশ্বাস আসবার আগে আমরা আইনের অধীনে বন্দী ছিলাম, যতক্ষণ না পর্যন্ত বিশ্বাস প্রকাশিত হয়। 24সুতরাং তখন আইন খ্রীষ্টের কাছে আনবার জন্য আমাদের পরিচালক হয়ে উঠল, যেন আমরা বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক বলে গনিত হই। 25কিন্তু যে অবধি বিশ্বাস আসল, সেই অবধি আমরা আর আইনের অধীন নই। 26কারণ তোমরা সবাই খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের পুত্র হয়েছ।27কারণ তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশ্যে বাপ্তিষ্ম নিয়েছ, সবাই খ্রীষ্টকে পরিধান করেছ। 28ইহূদি কি গ্রীক আর হতে পারে না, দাস কি স্বাধীন আর হতে পারে না, পুরুষ কি মহিলা আর হতে পারে না, কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা সবাই এক। 29আর তোমরা যদি খ্রীষ্টের হও, তবে তোমরাও অব্রাহামের বংশ, প্রতিজ্ঞানুসারে উত্তরাধিকারী।
41কিন্তু আমি বলি, উত্তরাধিকারী যত দিন শিশু থাকে, ততদিন সব কিছুর অধিকারী হলেও দাস ও তার মধ্য কোনো পার্থক্য থাকে না। 2কিন্তু তিনি তার পিতার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তার দেখাশোনাকারী এবং সম্পত্তির ভারপ্রাপ্ত কর্মচারীর অধীনে থাকেন।3তেমনি আমরাও যখন শিশু ছিলাম, তখন জগতের প্রাথমিক শিক্ষার অধীনে বন্দী ছিলাম। 4কিন্তু সময় সম্পূর্ণ হলে পর ঈশ্বর তাঁর নিজের পুত্রকে পাঠালেন, তিনি কুমারীর মাধ্যমে জন্ম নিলেন, ব্যবস্থার অধীনে জন্ম নিলেন, 5যেন তিনি মূল্য দিয়ে ব্যবস্থার অধীন লোকদেরকে মুক্ত করেন, যেন আমরা দত্তক পুত্রের অধিকার প্রাপ্ত হই।6আর তোমরা পুত্র, এই জন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রের আত্মাকে আমাদের হৃদয়ে পাঠালেন, যিনি “আব্বা, পিতা” বলে ডাকেন। 7তাই তোমরা আর দাস না, কিন্তু একজন পুত্র, আর যখন পুত্র, তখন তোমরা ঈশ্বরের মাধ্যমে উত্তরাধিকারীও হয়েছ।8কিন্তু সেই সময়ে, যখন তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না তখন তোমাদেরকে তাদের প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা তাদের দাস বানানো হয়েছিল, যারা মোটেই দেবতা ছিলনা। 9কিন্তু তোমরা এখন ঈশ্বরের পরিচয় পেয়েছ, বরং ঈশ্বরও তোমাদের জানেন, তবে কেমন করে আবার ঐ দুর্বল ও মূল্যহীন জগতের প্রাথমিক শিক্ষার দিকে ফিরছ? তোমরা কি ফিরে গিয়ে আবারও সেগুলির দাস হতে চাইছ?10তোমরা বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, ঋতু ও বছর পালন করছ। 11তোমাদের বিষয়ে আমার ভয় হয়, কি জানি, তোমাদের মধ্যে আমি বৃথাই পরিশ্রম করেছি।1312ভাইয়েরা, তোমাদেরকে এই অনুরোধ করছি, তোমরা আমার মত হও, কারণ আমিও তোমাদের মত। তোমরা আমার বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় কর নি। কিন্তু তোমরা জান, আমরা দেহের অসুস্থতার কারণে প্রথমবার তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচারের সুযোগ পেয়েছিলাম, 14আর আমার দেহের দুর্বলতায় তোমাদের যে পরীক্ষা হয়েছিল, তা তোমরা তুচ্ছ কর নি, ঘৃণাও কর নি, বরং ঈশ্বরের এক দূতের মতো, খ্রীষ্ট যীশুর মতো, আমাকে গ্রহণ করেছিলে।15তবে তোমাদের সেই ধন্য জীবন কোথায়? কারণ আমি তোমাদের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সাধ্য থাকলে তোমরা তোমাদের চোখ উপড়ে আমাকে দিতে। 16তবে আমি কি তোমাদের কাছে সত্য বলার কারণে আমি তোমাদের শত্রু হয়েগেছি?17তারা তোমাদের জয় করার জন্য খোঁজ করছে, কিন্তু কোন ভাল উদ্দেশ্যে নয়। বরং তারা তোমাদেরকে বাইরে রাখতে চায়, যেন তোমরাই তাঁদের খোঁজ কর। 18একটা ভালো উদ্দেশ্যের জন্য সবসময় উৎসাহীত হওয়া ভালেঅ শুধু মাত্র তোমাদের কাছে আমার উপস্থিতির সময়ে নয়।19তোমরা ত আমার সন্তান, আমি আবারও তোমাদেরকে নিয়ে প্রসব-যন্ত্রণা সহ্য করছি, যতক্ষণ না তোমাদের মধ্যে খ্রীষ্ট গঠিত হয়। 20আমার ইচ্ছা এই যে, আমি এখনই তোমাদের কাছে উপস্থিত হয়ে অন্য স্বরে কথা বলি, কারণ তোমাদের বিষয়ে আমি খুবই চিন্তিত।21বল দেখি, তোমরা তো ব্যবস্থার অধীনে থাকার ইচ্ছা কর, তোমরা কি ব্যবস্থার কথা শোন না? 22কারণ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে যে, "অব্রাহামের দুটি ছেলে ছিল, একটি দাসীর ছেলে, একটি স্বাধীনার ছেলে। 23আর ঐ দাসীর ছেলে দেহ অনুসারে, কিন্তু স্বাধীনার ছেলে প্রতিজ্ঞার গুণে জন্ম নিয়েছিল।24এই সব কথার রূপক অর্থ আছে, কারণ ঐ দুই স্ত্রী দুই নিয়ম। একটি সিনয় পর্বত থেকে উৎপন্ন ও দাসত্বের জন্য প্রসব করেছিলেন যিনি, সে হাগার। 25আর এই হাগার আরব দেশে সীনয় পর্বতকে এবং সে র্বতমান যিরূশালেমের প্রতিনিধিত করছেন, কারণ সে তাঁর সন্তানদের সঙ্গে দাসত্বে আছে।26কিন্তু যিরূশালেম যেটা স্বর্গে সেটা স্বাধীনা, আর সে আমাদের জননী। 27কারণ লেখা আছে, “তুমি বন্ধা স্ত্রী, যে প্রসব করতে অক্ষম, আনন্দ কর, যার প্রসব-যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা নেই, সে আনন্দধ্বনি কর ও উল্লাসে পরিপূর্ণ হও, কারণ সধবার সন্তান অপেক্ষা বরং অনাথার সন্তান বেশি।”28কিন্তু, ভাইয়েরা, তোমরাও ইসহাকের মতো প্রতিজ্ঞার সন্তান। 29সেই সময় দেহ অনুসারে জন্মানো ব্যক্তি যেমন আত্মিক ভাবে যিনি আত্মায় জন্ম নিয়েছিলেন তাঁকে অত্যাচার করত, তেমনি এখনও হচ্ছে।30কিন্তু শাস্ত্র কি বলে? “ঐ দাসীকে ও তার ছেলেকে বের করে দাও কারণ ঐ দাসীর ছেলে কোন ভাবেই স্বাধীনার ছেলের সঙ্গে উত্তরাধিকারী হবে না।” 31তাই, ভাইয়েরা, আমরা আর দাসীর সন্তান নই, আমরা স্বাধীনার সন্তান।
51স্বাধীনতার জন্যই খ্রীষ্ট আমাদেরকে স্বাধীন করেছেন। তাই তোমরা স্থির থাক এবং দাসত্বের যোঁয়ালীতে আর বন্দী হয়ো না। 2শোন, আমি পৌল তোমাদেরকে বলছি, যদি তোমরা ত্বকচ্ছেদ করে থাক, তবে খ্রীষ্টের কাছ থেকে তোমাদের কিছুই লাভ হবে না।3যে কোন ব্যক্তি ত্বকচ্ছেদ করে থাকে, আমি তাকে আবার এই সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সে ঋণশোধের মতো সমস্ত ব্যবস্থা পালন করতে বাধ্য। 4তোমরা যারা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধার্মিক হওয়ার জন্য চেষ্টা করছ, তোমরা খ্রীষ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছ, তোমরা অনুগ্রহ থেকে দূরে চলেগেছ।5কারণ আমরা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে বিশ্বাস দিয়ে ধার্মিকতার আশা পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষা করছি। 6কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে ত্বকছেদের কোন শক্তি নেই, অত্বকছেদেরও নেই, কিন্তু বিশ্বাস যা প্রেমের মাধ্যমে কাজ করতে সক্ষম। 7তোমরা তো সুন্দরভাবে দৌড়াচ্ছিলে, কে তোমাদেরকে বাধা দিল যে, তোমরা সত্যের বাধ্য হচ্ছ না? 8এই প্ররোচনা তাঁর মাধ্যমে হয়নি যিনি তোমাদেরকে আহ্বান করেছেন!9অল্প খামির সুজীর সমস্ত তাল খামিরে পরিপূর্ণ করে। 10তোমাদের বিষয়ে প্রভুতে আমার এমন দৃঢ় আশা আছে যে, তোমরা আর অন্য কোন বিষয়ে মনে চিন্তা করো না, কিন্তু যে তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করে, সে ব্যক্তি যেই হোক, সে তার বিচার দন্ড ভোগ করবে।11ভাইয়েরা, আমি যদি এখনও ত্বকছেদ প্রচার করি, তবে কেন আমি এখনও কষ্ট সহ্য করছি? সেক্ষেত্রে ক্রুশের বাঁধাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। 12যারা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করছে, আমি চাই তারা নিজেদেরকেও ছিন্নাঙ্গ (নপুংসক) করুক!13কারণ, ভাইয়েরা, তোমাদের স্বাধীনতার জন্য ডাকা হয়েছে, কিন্তু দেখো, সেই স্বাধীনতাকে দেহের জন্য একটি সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করো না, বরং প্রেমের মাধ্যমে একজন অন্যের দাস হও। 14কারণ সমস্ত ব্যবস্থা এই একটি বাক্যে পূর্ণ হয়েছে: “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।” 15কিন্তু তোমরা যদি একজন অন্য জনের সঙ্গে কামড়া-কামড়ি ও গ্রাস কর, তবে দেখো, যেন একজন অন্য জনের মাধ্যমে ধ্বংস না হও।16কিন্তু আমি বলি, তোমরা আত্মার বশে চল, তাহলে মাংসিক অভিলাষ পূর্ণ করবে না। 17কারণ দেহ আত্মার বিরুদ্ধে এবং আত্মা দেহের বিরুদ্ধে অভিলাষ করে, কারণ এই দুইটি বিষয় একটি অন্যটির বিপরীত, তাই তোমরা যা ইচ্ছা কর, তা করতে পার না। 18কিন্তু যদি তোমরা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে পরিচালিত হও, তবে তোমরা ব্যবস্থার অধীন নও।19আবার দেহের যে সমস্ত কাজ তা প্রকাশিত, সেগুলি এই- বেশ্যাগমন, অপবিত্রতা, যৌন লালসা, 20মূর্তিপূজা, যাদুবিদ্যা, শত্রুতা, কলহ, হিংসা, রাগের বহিঃপ্রকাশ, প্রতিযোগিতা, বিচ্ছিন্নতা, দলাদলি, 21হিংসা, মাতলামি, হৈহুল্লা করে মদ খাওয়া ও এই ধরনের অন্য অন্য দোষ। এই সব বিষয়ে আমি তোমাদেরকে সাবধান করছি, যেমন আগেও করেছিলাম, যারা এই রকম আচরণ করে, তারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাবে না।22কিন্তু পবিত্র আত্মার ফল হল ভালোবাসা, আনন্দ, শান্তি, সহ্যগুন, দয়ার স্বভাব, ভালো স্বভাব, বিশ্বস্ততা, 23নম্রতা ও নিজেকে দমন (আত্মসংযম), এই সব গুনের বিরুদ্ধে কোন নিয়ম নেই। 24আর যারা খ্রীষ্ট যীশুর, তারা দেহকে তার কামনা ও মন্দ অভিলাষের সঙ্গে ক্রুশে দিয়েছে।25যদি আমিরা পবিত্র আত্মার বশে জীবন যাপন করি, তবে এস, আমরা আত্মার বশে চলি। 26আমরা যেন বৃথা অহঙ্কার না করি, পরস্পরকে জ্বালাতন না করি ও একজন অন্য জনকে হিংসা না করি।
61ভাইয়েরা, যদি কেউ কোন অপরাধে ধরাও পড়ে, তবে আত্মিক যে তোমরা, তোমরা সেই রকম ব্যক্তিকে নম্রতার আত্মায় সুস্থ কর, নিজেকে দেখ, পাছে তুমিও পরীক্ষাতে না পড়। 2তোমরা একজন অন্যের ভার বহন কর, এইভাবে খ্রীষ্টের ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে পালন কর।3কারণ যদি কেউ মনে করে, আমি কিছু, কিন্তু বাস্তবে সে কিছুই নয়, তবে সে নিজেকে নিজেই ঠকায়। 4কিন্তু সবাই নিজের নিজের কাজের পরীক্ষা করুক, তাহলে সে শুধু নিজের কাছে গর্ব করার কারণ পাবে, অপরের কাছে নয়। 5কারণ প্রত্যেকে নিজের নিজের ভার বহন করবে।6কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের বাক্যের বিষয়ে শিক্ষা পায়, সে যেন তার শিক্ষককে সমস্ত ভালো বিষয়ের সহভাগী করে। 7তোমরা ভ্রান্ত হয়ো না। ঈশ্বরকে ঠাট্টা করা যায় না, কারণ মানুষ যা কিছু বোনে তাই কাটবে। 8তাই নিজের দেহের উদ্দেশ্যে যে বোনে, সে দেহ থেকে ক্ষয়শীল শস্য পাবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার উদ্দেশ্যে যে বোনে, সে আত্মা থেকে অনন্ত জীবনস্বরূপ শস্য পাবে।9আর এস, আমরা সৎ কাজ করতে করতে নিরুৎসাহ না হই, কারণ ক্লান্ত না হলে সঠিক সময়ে শস্য পাব। 10এই জন্য এস, আমরা যেমন সুযোগ পাই, তেমনি সবার প্রতি, বিশেষ করে যারা বিশ্বাসী বাড়ির পরিজন, তাদের প্রতি ভাল কাজ করি।11দেখ, আমি কত বড় অক্ষরে নিজের হাতে তোমাদেরকে লিখলাম। 12যে সকল লোক দেহে সুন্দর দেখাতে ইচ্ছা করে, তারাই তোমাদেরকে ত্বকছেদ হতে বাধ্য করছে, এর উদ্দেশ্য এই যেন খ্রীষ্টের ক্রুশের দ্বারা নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়। 13কারণ যারা ত্বকছেদ করে থাকে, তারা নিজেরাও ব্যবস্থা পালন করে না, বরং তাদের ইচ্ছা এই যে, তোমরা ত্বকছেদ কর, যেন তারা তোমাদের দেহে অহঙ্কার করতে পারে।14কিন্তু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশ ছাড়া আমি যে আর কোন বিষয়ে গর্ব করি, তা দূরে থাকুক, তাঁর মাধ্যমেই আমার জন্য জগত এবং জগতের জন্য আমি ক্রুশে বিদ্ধ। 15কারণ ত্বকছেদ কিছুই না, অত্বকছেদও না, কিন্তু নতুন সৃষ্টিই প্রধান বিষয়। 16আর যে সমস্ত লোক এই মানদণ্ড অনুযায়ী চলছে, তাদের উপরে, এমন কি ঈশ্বরের ইস্রায়েলের উপরেও শান্তি ও দয়া অবস্থান করুক।17এখন থেকে কেউ আমাকে কষ্ট না দিক, কারণ আমি প্রভু যীশুর সমস্ত চিহ্ন আমার দেহে বহন করছি। 18ভাইয়েরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার সঙ্গে থাকুক। আমেন।