Bengali, Bangla: Unlocked Literal Bible for John

Formatted for Translators

©2022 Wycliffe Associates
Released under a Creative Commons Attribution-ShareAlike 4.0 International License.
Bible Text: The English Unlocked Literal Bible (ULB)
©2017 Wycliffe Associates
Available at https://bibleineverylanguage.org/translations
The English Unlocked Literal Bible is based on the unfoldingWord® Literal Text, CC BY-SA 4.0. The original work of the unfoldingWord® Literal Text is available at https://unfoldingword.bible/ult/.
The ULB is licensed under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 4.0 International License.
Notes: English ULB Translation Notes
©2017 Wycliffe Associates
Available at https://bibleineverylanguage.org/translations
The English ULB Translation Notes is based on the unfoldingWord translationNotes, under CC BY-SA 4.0. The original unfoldingWord work is available at https://unfoldingword.bible/utn.
The ULB Notes is licensed under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 4.0 International License.
To view a copy of the CC BY-SA 4.0 license visit http://creativecommons.org/licenses/by-sa/4.0/
Below is a human-readable summary of (and not a substitute for) the license.
You are free to:
The licensor cannot revoke these freedoms as long as you follow the license terms.
Under the following conditions:
Notices:
You do not have to comply with the license for elements of the material in the public domain or where your use is permitted by an applicable exception or limitation.
No warranties are given. The license may not give you all of the permissions necessary for your intended use. For example, other rights such as publicity, privacy, or moral rights may limit how you use the material.

John

Chapter 1

1 2 3 1শুরুতে বাক্য ছিলেন এবং বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন এবং বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন। 2এই এক বাক্য শুরুতে ঈশ্বরের সাথে ছিলেন। 3সব কিছুই তাঁর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে, যা হয়েছে, তার কোনো কিছুই তাঁকে ছাড়া সৃষ্টি হয়নি। 4 5 4তাঁর মধ্যে জীবন ছিল এবং সেই জীবন মানবজাতির আলো ছিল। 5সেই আলো অন্ধকারের মধ্যে দীপ্তি দিচ্ছে, আর অন্ধকার আলোকে জয় করতে পারল না। 6 7 8 6ঈশ্বর একজন মানুষকে পাঠালেন তাঁর নাম ছিল যোহন। 7তিনি স্বাক্ষী হিসাবে এসেছিলেন সেই আলোর জন্য সাক্ষ্য দিতে, যেন সবাই তাঁর সাক্ষ্য শুনে বিশ্বাস করে। 8যোহন সেই আলো ছিলেন না, কিন্তু তিনি এসেছিলেন যেন সেই আলোর বিষয়ে তিনি সাক্ষ্য দিতে পারেন। 9 9তিনিই প্রকৃত আলো যিনি পৃথিবীতে আসছিলেন এবং যিনি সব মানুষকে আলোকিত করবেন। 10 11 10তিনি পৃথিবীর মধ্যে ছিলেন এবং পৃথিবী তাঁর দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল আর পৃথিবী তাঁকে চিনত না। 11তিনি তাঁর নিজের জায়গায় এসেছিলেন আর তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না। 12 13 12কিন্তু যতজন মানুষ তাঁকে গ্রহণ করল, যারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল, সেই সব মানুষকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার অধিকার দিলেন, 13যাদের জন্ম রক্ত থেকে নয়, মাংসিক অভিলাস থেকেও নয়, মানুষের ইচ্ছা থেকেও নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছা থেকেই হয়েছে। 14 15 14এখন সেই বাক্য দেহে পরিণত হলেন এবং আমাদের সাথে বসবাস করলেন। আমরা তাঁর মহিমা দেখেছি, যা পিতার কাছ থেকে আসা একমাত্র পুত্রের যে মহিমা, সেই অনুগ্রহে ও সত্যে পূর্ণ মহিমা আমরা দেখেছি। 15যোহন তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে চিত্কার করে বললেন, "ইনি সে জন যাঁর সম্বন্ধে আমি আগে বলেছিলাম, যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে অনেক মহান, কারণ তিনি আমার আগে ছিলেন।" 16 17 18 16কারণ তাঁর পূর্ণতা থেকে আমরা সবাই অনুগ্রহের উপর অনুগ্রহ পেয়েছি। 17কারণ ব্যবস্থা মোশির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল আর অনুগ্রহ ও সত্য যীশু খ্রীষ্টর মাধ্যমে এসেছে। 18ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি। সেই এক ও একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজে ঈশ্বর, যিনি পিতার সঙ্গে আছেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন। যীশুর বিষয়ে যোহনের সাক্ষ্য। 19 20 21 19এখন যোহনের সাক্ষ্য হল, যখন ইহূদি নেতারা কয়েক জন যাজক ও লেবীয়কে যিরূশালেম থেকে যোহনের কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করতে পাঠাল, ‘আপনি কে?’ 20তিনি অস্বীকার না করে স্পষ্ট কথায় উত্তর দিলেন, "আমি সেই খ্রীষ্ট নই"। 21আর তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, "তবে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?" তিনি বললেন, "আমি না।" তারা বলল, "আপনি কি ভাববাদী?" তিনি উত্তরে বললেন, "না" 22 23 22তখন তারা তাঁকে বলল, "আপনি কে বলুন, যাতে, যাঁরা আমাদের পাঠিয়েছেন, তাঁদেরকে আমরা উত্তর দিতে পারি। আপনি আপনার নিজের বিষয়ে কি বলেন?" 23তিনি বললেন, "মরূপ্রান্তে একজন চিত্কার করে ঘোষণা করছে, আমি হলাম তাঁর রব; যেমন যিশাইয় ভাববাদীর বইতে যেমন লেখা আছে, তোমরা প্রভুর রাজপথ সোজা কর,”। 24 25 24আর যাদেরকে যোহনের কাছে পাঠানো হয়েছিল তারা ছিল ফরীশী। তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো এবং বলল 25আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট না হন, এলিয় না হন, সেই ভাববাদীও না হন, তবে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন কেন? 26 27 28 26যোহন উত্তর দিয়ে তাদের বললেন, আমি জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি। কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমন একজন আছেন, যাকে তোমরা চেনো না। 27ইনি হলেন সেই যিনি আমার পরে আসছেন; আমি তাঁর জুতোর দড়ির বাঁধন খোলবার যোগ্যও নই। 28যর্দন নদীর অপর পারে বৈথনিয়া গ্রামে যেখানে যোহন বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন সেই জায়গায় এই সব ঘটনা ঘটেছিল। যীশু ঈশ্বরের মেষশাবক। John 1:26–28 — বাংলা (ulb) 29 30 31 29পরের দিন যোহন যীশুকে নিজের কাছে আসছে দেখে বললেন, ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি পৃথিবীর সব পাপ নিয়ে যান। 30ইনিই সেই মানুষ, যাঁর সম্বন্ধে যে আমি আগে বলেছিলাম, আমার পরে এমন একজন মানুষ আসছেন, যিনি আমার থেকে মহান কারণ তিনি আমার আগে থেকেই ছিলেন। 31আর আমি তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু তিনি যাতে ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশিত হন, সেইজন্য আমি এসে জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি। 32 33 34 32আর যোহন সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, আমি পবিত্র আত্মাকে পায়রার মতো স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছি এবং তাঁর উপরে থাকতে দেখেছি। 33আমি তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিষ্ম দিতে পাঠিয়েছেন তিনিই আমাকে বললেন, তুমি যাঁর উপরে পবিত্র আত্মাকে নেমে এসে থাকতে দেখবে, তিনিই সেই মানুষ যিনি পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম দেন। 34আর আমি দেখেছি ও সাক্ষ্য দিয়েছি যে, ইনিই হলেন ঈশ্বরের পুত্র। যীশুর প্রথম শিষ্যদের গ্রহণ। 35 36 35পরের দিন আবার যেমন যোহন তাঁর দুই জন শিষ্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন; 36তখন যীশু হেঁটে যাচ্ছেন এমন সময় দেখতে পেয়ে যোহন বললেন ঐ দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক। John 1:35–36 — বাংলা (ulb) 37 38 39 37সেই দুই শিষ্য যোহনের কাছে এই কথা শুনে যীশুর পিছন পিছন চলতে লাগলেন। 38তখন যীশু পিছনের দিকে তাকিয়ে তাদেরকে তাঁর পিছন পিছন আসতে দেখে বললেন, তোমরা কি চাও? তাঁরা উত্তর দিয়ে বললেন, "রব্বি- (অনুবাদ করলে এর মানে হল গুরু)- আপনি কোথায় থাকেন?" 39যীশু তাঁদেরকে বললেন, "এসো এবং দেখো"। তিনি যে জায়গায় থাকতেন তখন তারা সেই জায়গায় গিয়ে দেখলেন এবং সেই দিন তাঁর সঙ্গে থাকলেন; তখন বেলা অনুমানে বিকাল চারটা। 40 41 42 40যোহনের কথা শুনে যে দুই জন যীশুর সঙ্গে চলে গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে একজন ছিল শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয়। 41তিনি প্রথমে নিজের ভাই শিমোনকে খুঁজে পান এবং তাঁকে বলেন, "আমরা মশীহের দেখা পেয়েছি" (অনুবাদ করলে যার মানে হয় খ্রীষ্ট) 42তিনি তাঁকে যীশুর কাছে আনলেন। যীশু তাঁর দিকে দেখলেন এবং বললেন, "তুমি যোহনের ছেলে শিমোন। তোমাকে কৈফা নামে ডাকা হবে" (অনুবাদ করলে যার মানে হয় পিতর) যীশু ফিলিপ ও নথনেলকে ডাকলেন। 43 44 45 43পরের দিন যখন যীশু গালীলে যাওয়ার জন্য ঠিক করলেন, তিনি ফিলিপের খোঁজ পেলেন এবং তাঁকে বললেন, আমার সঙ্গে এসো। 44ফিলিপ ছিলেন বৈৎসৈদার লোক; আন্দ্রিয় ও পিতরও সেই একই শহরের লোক। 45ফিলিপ নথনেলকে খুঁজে পেলেন এবং তাঁকে বললেন, মোশির ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ বক্তারা যাঁর কথা লিখেছিলেন, আমরা তাঁকে পেয়েছি; তিনি যোষেফের ছেলে নাসরতীয় যীশু। John 1:43–45 — বাংলা (ulb) 46 47 48 46নথনেল তাঁকে বললেন, নাসরৎ থেকে কি ভালো কিছু আসতে পারে? ফিলিপ তাঁকে বললেন, এসো এবং দেখ। 47যীশু নথনেলকে নিজের কাছে আসতে দেখে তাঁর সমন্ধে বললেন, ঐ দেখ একজন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যার মনে কোনো ছলনা নেই। 48নথনেল তাঁকে বললেন, কেমন করে আপনি আমাকে চিনলেন? যীশু উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, ফিলিপ তোমাকে ডাকবার আগে যখন তুমি সেই ডুমুরগাছের নিচে ছিলে তখন তোমাকে আমি দেখেছিলাম। 49 50 51 49নথনেল তাঁকে উত্তর করে বললেন, রব্বি, আপনিই হলেন ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই হলেন ইস্রায়েলের রাজা। 50যীশু উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, কারণ আমি তোমাকে বললাম, সেই ডুমুরগাছের নিচে আমি তোমাকে দেখেছিলাম এই কথা বলার জন্যই তুমি কি বিশ্বাস করলে? এর সব কিছুর থেকেও মহৎ কিছু দেখতে পাবে। 51যীশু বললেন, সত্য সত্য আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা দেখবে স্বর্গ খুলে গেছে এবং ঈশ্বরের দূতেরা মানবপুত্রের উপর দিয়ে উঠছেন এবং নামছেন।

Chapter 2

1 2 1তৃতীয় দিনে গালীলের কান্না শহরে এক বিয়ে ছিল এবং যীশুর মা সেখানে ছিলেন; 2আর সেই বিয়েতে যীশুর ও তাঁর শিষ্যদেরও নিমন্ত্রণ হয়েছিল। 3 4 5 3যখন আঙ্গুর রস শেষ হয়ে গেল যীশুর মা তাঁকে বললেন, ওদের আঙ্গুর রস নেই। 4যীশু তাঁকে বললেন, হে নারী এই বিষয়ে তোমার সঙ্গে আমার কি কাজ আছে? আমার সময় এখনও আসেনি। 5তাঁর মা চাকরদের বললেন, ইনি তোমাদের যা কিছু করতে বলেন তাই কর। 6 7 8 6সেখানে ইহূদি ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী বিশুদ্ধ করার জন্য পাথরের ছয়টি জালা বসান ছিল, তার এক একটিতে প্রায় তিন মণ করে জল ধরত। 7যীশু তাদেরকে বললেন "ঐ সব জালাগুলি জল দিয়ে ভর্তি কর"। সুতরাং তারা সেই পাত্রগুলি কাণায় কাণায় জলে ভর্তি করল। 8পরে তিনি সেই চাকরদের বললেন, এখন কিছুটা এখান থেকে তুলে নিয়ে ভোজন কর্তার কাছে নিয়ে যাও। তখন তারা তাই করলো। 9 10 9সেই আঙ্গুর রস যা জল থেকে করা হয়েছে, ভোজন কর্তা পান করে দেখলেন এবং তা কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে তা জানতেন না কিন্তু যে চাকরেরা জল তুলেছিল তারা জানতো তখন ভোজন কর্তা বরকে ডাকলেন 10এবং তাকে বললেন, সবাই প্রথমে ভালো আঙ্গুর রস পান করতে দেয় এবং পরে যখন সবার পান করা হয়ে যায় তখন প্রথমের থেকে একটু নিম্নমানের আঙ্গুর রস পান করতে দেয়; কিন্তু তুমি ভালো আঙ্গুর রস এখন পর্যন্ত রেখেছ। 11 11এইভাবে যীশু গালীল দেশের কান্নাতে এই প্রথম চিহ্ন হিসাবে আশ্চর্য্য কাজ করে নিজের মহিমা প্রকাশ করলেন; তখন তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বিশ্বাস করলেন। যীশু মন্দির পরিষ্কার করলেন। 12 12এই সব কিছুর পরে তিনি, তাঁর মা ও ভাইয়েরা এবং তাঁর শিষ্যরা কফরনাহূমে নেমে গেলেন এবং সেখানে কিছুদিন থাকলেন। 13 14 13ইহূদিদের নিস্তারপর্ব্ব খুব কাছে তখন যীশু যিরূশালেমে গেলেন। 14পরে তিনি মন্দিরের মধ্যে দেখলেন যে লোকে গরু, মেষ ও পায়রা বিক্রি করছে এবং টাকা বদল করার লোকও বসে আছে; 15 16 15তখন তিনি ঘাস দিয়ে একটা চাবুক তৈরী করলেন এবং সেইটি দিয়ে সব গরু, মেষ ও মানুষদেরকে উপাসনা ঘর থেকে বের করে দিলেন এবং টাকা বদল করার লোকদের টাকা তিনি ছড়িয়ে দিয়ে টেবিলগুলিও উল্টে দিলেন; 16তিনি পায়রা বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বললেন, "এই জায়গা থেকে এই সব নিয়ে যাও; আমার পিতার গৃহকে ব্যবসার জায়গা বানানো বন্ধ করো।" 17 18 19 17তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল যে, পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার গৃহের উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করবে।” 18তখন ইহূদিরা উত্তর দিয়ে যীশুকে বললেন, তুমি আমাদেরকে কি চিহ্ন দেখাবে যে কি ক্ষমতায় এই সব কাজ তুমি করছ? 19যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, তোমরা এই মন্দির ভেঙে ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে আবার সেটা ওঠাব। 20 21 22 20তখন ইহূদিরা বলল, এই মন্দির তৈরী করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছে আর তুমি কি তিন দিনের মধ্যে সেটা ওঠাবে? 21যদিও ঈশ্বরের মন্দির বলতে তিনি নিজের শরীরের কথা বলছিলেন। 22সুতরাং যখন তিনি মৃতদের মধ্য থেকে উঠলেন তখন তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল যে, তিনি এই কথা আগে বলেছিলেন এবং তাঁরা শাস্ত্রের কথায় এবং যীশুর বলা কথার উপর বিশ্বাস করলেন। 23 24 25 23তিনি যখন উদ্ধার পর্বের সময় যিরূশালেমে ছিলেন, তখন যে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তা দেখে অনেকে তাঁর নামে বিশ্বাস করল। 24কিন্তু যীশু নিজে তাদের ওপরে নিজের সম্বন্ধে বিশ্বাস করলেন না, কারণ তিনি সবাইকে জানতেন, 25এবং কেউ যে মানুষ জাতির সমন্ধে সাক্ষ্য দেয়, এতে তার প্রয়োজন ছিল না; কারণ মানুষ জাতির অন্তরে কি আছে তা তিনি নিজে জানতেন।

Chapter 3

1 2 1ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন মানুষ ছিলেন; তিনি একজন ইহূদি সভার নেতা। 2এই মানুষটি রাত্রিতে যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন, রব্বি, আমরা জানি যে আপনি একজন গুরু এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন; কারণ আপনি এই যে সব আশ্চর্য্য কাজ করছেন তা ঈশ্বর সঙ্গে না থাকলে কেউ করতে পারে না। 3 4 3যীশু উত্তর দিয়ে তাকে বললেন, আমি তোমাদের সত্যি সত্যি বলছি, কারুর নতুন জন্ম না হওয়া পর্যন্ত সে ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পারে না। 4নীকদীম তাঁকে বললেন, মানুষ যখন বুড়ো হয় তখন কেমন করে তার আবার জন্ম হতে পারে? সে তো আবার মায়ের গর্ভে ফিরে গিয়ে দ্বিতীয়বার জন্ম নিতে পারে না, সে কি তা পারে? 5 6 5যীশু উত্তর দিলেন, আমি তোমাদের সত্যি সত্যি বলছি, যদি কেউ জল এবং আত্মা থেকে না জন্ম নেয় তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। 6যা মানুষ থেকে জন্ম নেয় তা মাংসিক এবং যা আত্মা থেকে জন্ম নেয় তা আত্মাই। 7 8 7তোমাদের অবশ্যই নতুন জন্ম হতে হবে এই কথা আমি বললাম বলে তোমরা বিষ্মিত হয়ো না। 8বাতাস যে দিকে ইচ্ছা করে সেই দিকে বয়ে চলে। তুমি শুধু তার শব্দ শুনতে পাও কিন্তু কোন দিক থেকে আসে অথবা কোন দিকে চলে যায় তা জান না; আত্মা থেকে যারা জন্ম নেয় প্রত্যেক জন সেই রকম। 9 10 11 9নীকদীম উত্তর করে তাঁকে বললেন, এ সব কেমন ভাবে হতে পারে? 10যীশু তাঁকে উত্তর দিয়ে বললেন, তুমি একজন ইস্রায়েলের গুরু, আর তুমি এখনো এ সব বুঝতে পারছ না? 11সত্য, সত্যই, আমরা যা জানি তাই বলছি এবং যা দেখেছি তারই সাক্ষ্য দিই। আর তোমরা আমাদের সাক্ষ্য গ্রাহ্য কর না। 12 13 12আমি যদি জাগতিক বিষয়ে তোমাদের বলি এবং তোমরা বিশ্বাস না কর, তবে যদি স্বর্গের বিষয়ে বলি তোমরা কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13আর স্বর্গে কেউ ওঠেনি শুধুমাত্র যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিলেন তিনি ছাড়া, আর তিনি হলেন মানবপুত্র। 14 15 14আর মোশি যেমন মরূপ্রান্তে সেই সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, ঠিক তেমনি মানবপুত্রকেও উঁচুতে অবশ্যই তুলতে হবে, 15সুতরাং যারা সবাই তাঁতে বিশ্বাস করবে তারা অনন্ত জীবন পাবে। 16 17 18 16কারণ ঈশ্বর জগতকে এত ভালবাসলেন যে, নিজের একমাত্র পুত্রকে দান করলেন, যেন যে কেউ তাঁতে বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। 17কারণ ঈশ্বর জগতকে দোষী প্রমাণ করতে পুত্রকে জগতে পাঠাননি কিন্তু জগত যেন তাঁর মাধ্যমে পরিত্রাণ পায়। 18যে তাঁতে বিশ্বাস করে তাকে দোষী করা হয় না। যে বিশ্বাস না করে তাকে দোষী বলে আগেই ঠিক করা হয়েছে কারণ সে অদ্বিতীয় ঈশ্বরের পুত্রের নামে বিশ্বাস করে নি। 19 20 21 19বিচারের কারণ হলো এই যে, পৃথিবীতে আলো এসেছে এবং মানুষেরা আলো থেকে অন্ধকার বেশি ভালবেসেছে, কারণ তাদের কর্মগুলি ছিল মন্দ। 20কারণ প্রত্যেকে যারা মন্দ কাজ করে তারা আলোকে ঘৃণা করে এবং তাদের সব কর্ম্মের দোষ যাতে প্রকাশ না হয় তার জন্য তারা আলোর কাছে আসে না। 21যদিও, যে সত্য কাজ করে সে আলোর কাছে আসে, যেন তার সব কাজ ঈশ্বরের ইচ্ছামত করা হয়েছে বলে প্রকাশ পায়। যীশুর সমন্ধে যোহনের প্রচার। 22 23 24 22তারপরে যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা যিহূদিয়া দেশে গেলেন, আর তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকলেন এবং বাপ্তিষ্ম দিতে লাগলেন। 23আর যোহনও শালীম দেশের কাছে ঐনোন নামে একটি জায়গায় বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন, কারণ সেই জায়গায় অনেক জল ছিল। আর মানুষেরা তাঁর কাছে আসতো এবং বাপ্তিষ্ম নিত। 24কারণ তখনও যোহনকে জেলখানায় পাঠানো হয়নি। 25 26 25তখন একজন ইহূদির সঙ্গে বিশুদ্ধ হওয়ার বিষয় নিয়ে যোহনের শিষ্যদের তর্ক বিতর্ক হল। 26তারা যোহনের কাছে গিয়ে তাঁকে বলল রব্বি, যিনি যর্দনের অপর পারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং যাঁর সমন্ধে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, দেখুন তিনি বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন এবং সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে। 27 28 27যোহন উত্তর দিয়ে বললেন, স্বর্গ থেকে যতক্ষণ না মানুষকে কিছু দেওয়া হয়েছে ততক্ষণ তা ছাড়া সে আর কিছুই পেতে পারে না। 28তোমরা নিজেরাই আমার সাক্ষী যে, আমি বলেছি আমি সেই খ্রীষ্ট নই, কিন্তু আমি বলেছি তাঁর আগে আমাকে পাঠানো হয়েছে। 29 30 29যার কাছে কনে আছে সেই বর; কিন্তু বরের বন্ধু যে দাঁড়িয়ে বরের কথা শুনে, সে তাঁর গলার আওয়াজ শুনে খুব আনন্দিত হয়; ঠিক সেইভাবে আমার এই আনন্দ পূর্ণ হল। 30তিনি অবশ্যই বড় হবেন, আমি অবশ্যই ছোট হব। 31 32 33 31যিনি উপর থেকে আসেন, তিনি সব কিছুর প্রধান; যে পৃথিবী থেকে আসেন সে পৃথিবীর এবং সে পৃথিবীর জিনিষেরই কথাই বলে; যিনি স্বর্গ থেকে আসেন, তিনি সব কিছুর প্রধান। 32তিনি যা কিছু দেখেছেন ও শুনেছেন, তারই সাক্ষ্য দিচ্ছেন, আর তাঁর সাক্ষ্য কেউ গ্রহণ করে না। 33যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে, সে নিশ্চিত করেছে যে ঈশ্বর সত্য। 34 35 36 34কারণ ঈশ্বর যাকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের বাক্য বলেন; কারণ ঈশ্বর আত্মা মেপে দেন না। 35পিতা পুত্রকে ভালবাসেন এবং সব কিছুই তাঁর হাতে দিয়েছেন। 36যে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছে, সে অনন্ত জীবন পেয়েছে; কিন্তু যে কেউ পুত্রকে না মেনে চলে সে জীবন দেখতে পাবে না কিন্তু ঈশ্বরের ক্রোধ তার উপরে থাকবে।

Chapter 4

1 2 3 1প্রভু যখন জানতে পারলেন যে, ফরীশীরা শুনেছে, যীশু যোহনের চেয়ে অনেক বেশি শিষ্য করেন এবং বাপ্তিষ্ম দেন 2যদিও যীশু নিজে বাপ্তিষ্ম দিতেন না কিন্তু তাঁর শিষ্যরাই দিতেন, 3তখন তিনি যিহূদিয়া ছাড়লেন এবং আবার গালীলে চলে গেলেন। 4 5 4আর গালীলে যাবার সময় শমরিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হল। 5তখন তিনি শুখর নামক শমরিয়ার এক শহরের কাছে আসলেন; যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমি দান করেছিলেন এই শহর তার কাছে। 6 7 8 6আর সেই জায়গায় যাকোবের কূপ ছিল। তখন যীশু হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে সেই কূপের পাশে বসলেন। তখন অনুমানে দুপুর বেলা ছিল। 7শমরিয়ার একজন স্ত্রীলোক জল তুলতে এসেছিলেন এবং যীশু তাকে বললেন, "আমাকে পান করবার জন্য একটু জল দাও"। 8কারণ তাঁর শিষ্যেরা খাবার কেনার জন্য শহরে গিয়েছিলেন। 9 10 9তখন শমরীয় স্ত্রীলোকটী তাঁকে বললেন, আপনি ইহূদি হয়ে কেমন করে আমার কাছে পান করবার জন্য জল চাইছেন? আমি ত একজন শমরীয় স্ত্রীলোক।- কারণ শমরীয়দের সঙ্গে ইহূদিদের কোনো আদান প্রদান নেই। 10যীশু উত্তরে তাকে বললেন, তুমি যদি জানতে, ঈশ্বরের দান কি, আর কে তোমাকে বলছেন, ‘আমাকে পান করবার জল দাও,’ তবে তাঁরই কাছে তুমি চাইতে এবং তিনি হয়তো তোমাকে জীবনদায়ী জল দিতেন। 11 12 11স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, জল তোলার জন্য আপনার কাছে বালতি নেই এবং কূপটীও গভীর; তবে সেই জীবন জল আপনি কোথা থেকে পেলেন? 12আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোব থেকে কি আপনি মহান? যিনি আমাদেরকে এই কূপ দিয়েছেন, আর এই কূপের জল তিনি নিজে ও তাঁর পুত্রেরা পান করতেন ও তার পশুর পালও পান করত। 13 14 13যীশু উত্তর দিয়ে তাকে বললেন, যে কেউ এই জল পান করে, তার আবার পিপাসা পাবে; 14কিন্তু আমি যে জল দেব তা যে কেউ পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না; বরং আমি তাকে যে জল দেব তা তার অন্তরে এমন জলের ফোয়ারার মত হবে যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলিয়ে উঠবে। 15 16 15স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, সেই জল আমাকে দিন যেন আমার পিপাসা না পায় এবং জল তোলার জন্য এখানে না আসতে হয়। 16যীশু তাকে বললেন, যাও আর তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এসো। 17 18 17স্ত্রীলোকটী উত্তরে তাঁকে বললেন, আমার স্বামী নেই। যীশু তাকে উত্তরে বললেন, তুমি ভালই বলেছ যে, আমার স্বামী নেই; 18কারণ তোমার পাঁচটি স্বামী ছিল এবং এখন তোমার সঙ্গে যে আছে সে তোমার স্বামী নয়; এটা তুমি সত্য কথা বলেছ। 19 20 19স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, আমি দেখছি যে আপনি একজন ভবিষ্যৎ বক্তা। 20আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতের উপর উপাসনা করতেন কিন্তু আপনারা বলে থাকেন যে, যিরূশালেমই হলো সেই জায়গা যে জায়গায় মানুষের উপাসনা করা উচিত। 21 22 21যীশু তাকে উত্তর দিয়ে বললেন, হে নারী, আমাকে বিশ্বাস কর; একটা সময় আসছে যখন তোমরা না এই পর্বতে না যিরূশালেমে পিতার উপাসনা করবে। 22তোমরা যাকে জান না তাকে উপাসনা করছ; আমরা যাকে জানি তারই উপাসনা করি, কারণ ইহূদিদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ আসবে। 23 24 23যদিও এমন সময় আসছে বরং এখনই সেই সময়, যখন প্রকৃত উপাসনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে; কারণ বাস্তবিক পিতা এই রকম উপাসনাকারী কে খোঁজ করেন। 24ঈশ্বর আত্মা; এবং যারা তাঁকে উপাসনা করে, তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে। 25 26 25স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, আমি জানি যে মশীহ আসছেন, যাকে খ্রীষ্ট বলে, তিনি যখন আসবেন তখন আমাদেরকে সব কিছু জানাবেন। 26যীশু তাকে বললেন, আমি, যে তোমার সঙ্গে কথা বলছি, আমিই সেই। 27 27ঠিক সেই সময়ে তাঁর শিষ্যরা ফিরে আসলেন। আর তারা আশ্চর্য্য হলেন যে তিনি কেন একটি স্ত্রীলোকের সঙ্গে কথা বলছেন, যদিও কেউ বলেননি, আপনি কি চান? অথবা কি জন্য তার সঙ্গে কথা বলছেন? 28 29 30 28তখন সেই স্ত্রীলোকটী নিজের কলসী ফেলে রেখে শহরে ফিরে গেল এবং লোকদের বলল, 29এস, দেখো একজন মানুষ আমি যা কিছু আজ পর্যন্ত করেছি তিনি সব কিছুই আমাকে বলে দিলেন; তিনি কি সেই খ্রীষ্ট নন? 30তারা শহর থেকে বের হয়ে তাঁর কাছে আসলেন। 31 32 33 31এর মধ্যে শিষ্যরা তাঁকে আবেদন করে বললেন, রব্বি, কিছু খেয়ে নিন। 32কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, আমার কাছে খাবার জন্য খাদ্য আছে যার সম্পর্কে তোমরা জান না। 33সেইজন্য শিষ্যেরা একে অপরকে বলতে লাগলেন, কেউ তো ওনার খাবার জন্য কিছু আনেনি, এনেছে কি? 34 35 36 34যীশু তাঁদের বললেন, আমার খাদ্য এই যে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন যেন তাঁর ইচ্ছা পালন করি এবং তাঁর কাজ সম্পূর্ণ করি। 35তোমরা কি বল না, "এখনো চার মাস বাকি তারপরে শস্য কাটবার সময় আসবে? আমি তোমাদেরকে বলছি, চোখ তুলে শস্য ক্ষেতের দিকে তাকাও, শস্য পেকে গেছে, কাটার সময় হয়েছে।" 36যে ফসল কাটে সে বেতন পায় এবং অনন্ত জীবনের জন্য ফল জড়ো করে রাখে; সুতরাং যে বীজ বোনে ও যে ফসল কাটে সবাই একসঙ্গে আনন্দ করে। 37 38 37কারণ এই কথা সত্য যে, একজন বোনে অন্য একজন কাটে। 38আমি তোমাদের ফসল কাটতে পাঠালাম, যার জন্য তোমরা কোনো কাজ করনি; অন্য লোক পরিশ্রম করেছে এবং তোমরা তাদের পরিশ্রম করা ক্ষেতে ঢুকেছ। অনেক শমরীয় বিশ্বাস করলেন। 39 40 39সেই শহরের শমরীয়েরা অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল কারণ সেই স্ত্রীলোকটী সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, আমি যা কিছু আজ পর্যন্ত করেছি তিনি আমাকে সব কিছুই বলে দিয়েছেন। 40সুতরাং সেই শমরীয়েরা যখন তাঁর কাছে আসল, তারা তখন তাঁকে অনুরোধ করল যেন তিনি তাদের সঙ্গে থাকেন এবং তাতে তিনি দুই দিন সেখানে ছিলেন। 41 42 41এবং আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করল; 42তারা সেই স্ত্রীলোককে বলতে লাগল, আমরা যে বিশ্বাস করছি সে শুধুমাত্র তোমার কথা শুনে নয়, কারণ আমরা নিজেরা শুনেছি ও এখন জানতে পেরেছি যে, ইনি হলেন প্রকৃত জগতের ত্রাণকর্তা। যীশু রাজকর্মীর ছেলেকে সুস্থ করলেন। 43 44 45 43সেই দুই দিনের পর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে গালীলে যাবার জন্য রওনা দিলেন। 44কারণ যীশু নিজে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, ভবিষ্যৎ বক্তা তাঁর নিজের দেশে সম্মান পান না। 45যখন তিনি গালীলে আসলেন তখন গালীলীয়েরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেছিল, যিরূশালেমে পর্বের সময়ে তিনি যা কিছু করেছিলেন, সে সব তারা দেখেছিল; কারণ তারাও সেই পর্ব্বে গিয়েছিল। 46 47 46পরে তিনি আবার গালীলের সেই কান্না শহরে আসলেন, যেখানে তিনি জলকে আঙ্গুর রস বানিয়েছিলেন। সেখানে একজন রাজকর্মী ছিলেন যাঁর ছেলে কফরনাহূমে অসুস্থ ছিল। 47যখন তিনি শুনলেন যীশু যিহূদিয়া থেকে গালীলে এসেছেন তিনি তাঁর কাছে গেলেন এবং অনুরোধ করলেন যেন তিনি আসেন এবং তাঁর ছেলেকে সুস্থ করেন যে প্রায় মরে যাবার মত হয়েছিল। 48 49 50 48তখন যীশু তাঁকে বললেন, চিহ্ন এবং বিষ্ময়জনক কাজ যতক্ষণ না দেখ, তোমরা বিশ্বাস করবে না। 49সেই রাজকর্মী তাঁকে বললেন, হে প্রভু আমার ছেলেটা মরার আগে আসুন। 50যীশু তাঁকে বললেন যাও, তোমার ছেলে বেঁচে গেছে। সেই লোকটিকে যীশু যে কথা বললেন তিনি তা বিশ্বাস করলেন এবং তাঁর নিজের রাস্তায় চলে গেলেন। 51 52 51যখন তিনি যাচ্ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর চাকরেরা তাঁর কাছে এসে বলল আপনার ছেলেটি বেঁচে গেছে। 52তখন তিনি তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন কোন সময় তার সুস্থ হওয়া শুরু হয়েছিল? তারা তাঁকে বলল, কাল প্রায় দুপুর একটার সময়ে তার জ্বর ছেড়ে গিয়েছে। 53 54 53তখন পিতা বুঝতে পারলেন, যীশু সেই ঘন্টাতেই তাঁকে বলেছিলেন, তোমার ছেলে বেঁচে গেছে; সুতরাং তিনি নিজে ও তাঁর পরিবারের সবাই বিশ্বাস করলেন। 54যিহূদিয়া থেকে গালীলে আসবার পর যীশু আবার এই দ্বিতীয়বার আশ্চর্য্য কাজ করলেন।

Chapter 5

1 2 3 4 1এর পরে ইহূদিদের একটি উত্সব ছিল এবং যীশু যিরূশালেমে গিয়েছিলেন। 2যিরূশালেমে মেষ ফটকের কাছে একটি পুকুর আছে, ইব্রীয় ভাষায় সেই পুকুরের নাম বৈথেসদা, তার পাঁচটি ছাদ দেওয়া ঘাট আছে। 3সেই সব ঘাটে অনেকে যারা অসুস্থ মানুষ, অন্ধ, খঞ্জ ও যাদের শরীর শুকিয়ে গেছে তারা পড়ে থাকত। 4[তারা জলকম্পনের অপেক্ষায় থাকত। কারণ বিশেষ বিশেষ সময়ে ঐ পুকুরে প্রভুর এক দূত নেমে আসতেন ও জল কম্পন করতেন; সেই জলকম্পের পরে যে কেউ প্রথমে জলে নামত তার যে কোন রোগ হোক সে ভালো হয়ে যেতো।] 5 6 5সেখানে একজন অসুস্থ মানুষ ছিল, সে আটত্রিশ বছর ধরে অচল অবস্থায় আছে। 6যখন যীশু তাকে পড়ে থাকতে দেখলেন এবং অনেকদিন ধরে সেই অবস্থায় আছে জানতে পেরে তিনি তাকে বললেন, "তুমি কি সুস্থ হতে চাও"? 7 8 7অসুস্থ মানুষটি উত্তর দিলেন, মহাশয়, আমার কেউ নেই যে, যখন জল কম্পিত হয় তখন আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেয়; আমি যখন চেষ্টা করি, অন্য একজন আমার আগে নেমে পড়ে। 8যীশু তাকে বললেন, "উঠ, তোমার বিছানা তুলে নাও এবং হেঁটে বেড়াও"। 9 9সেই মুহূর্তেই ওই মানুষটি সুস্থ হয়ে গেল এবং নিজের বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াতে লাগল। সেই দিন ছিল বিশ্রামবার। 10 11 10সুতরাং যাকে সুস্থ করা হয়েছিল তাকে ইহূদি নেতারা বললে, আজ বিশ্রামবার, ব্যবস্থা অনুসারে বিছানা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তোমার উচিত নয়। 11কিন্তু সে তাদেরকে উত্তর দিল, যিনি আমাকে সুস্থ করেছেন তিনি আমাকে বললেন, "তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে চলে যাও"। 12 13 12তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, সেই মানুষটি কে যে তোমাকে বলেছে, "বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও"। 13যদিও যে মানুষটি সুস্থ হয়েছিল সে জানত না তিনি কে ছিলেন, কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক থাকার জন্য যীশু সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন (চলে গিয়েছিলেন)। 14 15 14পরে যীশু উপাসনা ঘরে তাকে দেখতে পেলেন এবং তাকে বললেন, দেখ, তুমি সুস্থ হয়েছ; আর কখনো পাপ করো না, পাছে তোমার প্রতি আর খারাপ কিছু ঘটে। 15সেই মানুষটি চলে গেল এবং ইহূদি নেতাদের বলল যে, উনি যীশুই ছিলেন যিনি তাকে সুস্থ করেছেন। পুত্রের মাধ্যমে জীবন। 16 17 18 16আর এই সব কারণে ইহূদি নেতারা যীশুকে তাড়না করতে লাগল, কারণ তিনি বিশ্রামবারে এই সব কাজ করছিলেন। 17যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, আমার পিতা এখনও পর্যন্ত কাজ করেন এবং আমিও করি। 18এই কারণে ইহূদিরা তাঁকে মেরে ফেলার খুব চেষ্টা করছিল কারণ তিনি শুধু বিশ্রামবারের নিয়ম ভাঙছিলেন তা নয় কিন্তু তিনি ঈশ্বরকেও নিজের পিতা বলে নিজেকে ঈশ্বরের সমান করতেন। 19 20 19যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, সত্য, সত্য, পুত্র নিজে থেকে কিছুই করতে পারেন না, কেবল পিতাকে যা কিছু করতে দেখেন, তাই করেন; কারণ তিনি যা কিছু করেন পুত্রও সেই সব একইভাবে করেন। 20কারণ পিতা পুত্রকে ভালবাসেন এবং তিনি নিজে যা কিছু করেন সবই তাঁকে দেখান এবং এর থেকেও মহৎ মহৎ কাজ তাঁকে দেখাবেন যেন তোমরা সবাই আশ্চর্য্য হও। 21 22 23 21কারণ পিতা যেমন মৃতদের ওঠান এবং জীবন দান করেন, সেই রকম পুত্রও যাদেরকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দেন। 22কারণ পিতা কারও বিচার করেন না কিন্তু সব বিচারের ভার পুত্রকে দিয়েছেন, 23সুতরাং সবাই যেমন পিতাকে সম্মান করে, তেমনি পুত্রকে সবাই সম্মান করে। যে পুত্রকে সম্মান করে না, সে পিতাকে সম্মান করে না যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন। 24 24সত্য, সত্যই বলছি যে কেউ আমার বাক্য শুনে এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং তাকে দোষী করা হবে না কিন্তু সে মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়ে গেছে। 25 25সত্য, সত্যই বলছি এমন সময় আসছে, বরং এখন সেই সময়, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের গলার শব্দ শুনবে এবং যারা শুনবে তারা জীবিত হবে। 28 29 28এই জন্য বিষ্মিত হয়ো না, কারণ এমন সময় আসছে, যখন কবরের মধ্যে যারা আছে তারা সবাই তাঁর গলার শব্দ শুনতে পাবে, 29এবং যারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য ভালো কাজ করেছে ও যারা খারাপ কাজ করেছে তারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বের হয়ে আসবে। 30 31 32 30আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারি না। আমি যেমন শুনি তেমন বিচার করি এবং আমার বিচার ন্যায়পরায়ন কারণ আমি নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করতে চেষ্টা করি না কিন্তু আমাকে যিনি পঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করতে চেষ্ঠা করি। যীশুর সমন্ধে সাক্ষ্য। 31আমি যদি নিজের সমন্ধে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবে আমার সাক্ষ্য সত্য হবে না। 32আমার সমন্ধে অন্য আর একজন সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং আমি জানি যে আমার সমন্ধে তিনি যে সাক্ষ্য দিচ্ছেন সেই সাক্ষ্য সত্য। 33 34 35 33তোমরা যোহনের কাছে লোক পাঠিয়েছ এবং তিনি সত্যের হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। 34আমি যে সাক্ষ্য গ্রহণ করি তা মানুষ থেকে নয় তবুও আমি এই সব বলছি যেন তোমরা পরিত্রাণ পাও। 35যোহন একজন জলন্ত ও আলোময় প্রদীপ ছিলেন এবং তোমরা তাঁর আলোতে কিছু সময় আনন্দ করতে রাজি হয়েছিলে। 36 37 38 36কিন্তু যোহনের দেওয়া সাক্ষ্য থেকে আমার আরও বড় সাক্ষ্য আছে; কারণ পিতা আমাকে যে সব কাজ সম্পন্ন করতে দিয়েছেন, যে সব কাজ আমি করছি, সেই সব আমার উদ্দেশ্যে এই সাক্ষ্য দেয় যে পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন। 37আর পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনিই আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর গলার শব্দ তোমরা কখনও শোননি, তাঁর আকারও কখনো দেখনি। 38তাঁর বাক্য তোমাদের অন্তরে থাকে না; কারণ তিনি যাকে পাঠিয়েছেন তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর না। 39 40 39তোমরা পবিত্র শাস্ত্র খোঁজ করো কারণ তোমরা মনে করো যে তাতেই তোমাদের অনন্ত জীবন আছে এবং এই একই বাক্য আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়; 40এবং তোমরা জীবন পাবার জন্য আমার কাছে আসতে রাজি হও না। 41 42 41আমি মানুষদের থেকে গৌরব নিই না! 42কিন্তু আমি জানি যে তোমাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের ভালবাসা নেই। 43 44 43আমি আমার পিতার নামে এসেছি এবং তোমরা আমাকে গ্রহণ কর না। যদি অন্য কেউ তার নিজের নামে আসে, তাকে তোমরা গ্রহণ করবে। 44তোমরা কিভাবে বিশ্বাস করবে? তোমরা তো একে অপরের কাছ থেকে প্রশংসা গ্রহণ করছ কিন্তু শুধুমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে যে গৌরব আসে তার চেষ্ঠা কর না। 45 46 47 45মনে করো না যে আমি পিতার কাছে তোমাদের দোষী করব। সেখানে আর একজন আছেন যিনি তোমাদের দোষী করেন তিনি হলেন মোশি যাঁর উপরে তোমরা আশা রেখেছ। 46যদি তোমরা মোশিকে বিশ্বাস করতে তবে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ আমার সম্পর্কেই তিনি লিখেছেন। 47যেহেতু তাঁর লেখায় বিশ্বাস কর না, তবে আমার বাক্যে কিভাবে বিশ্বাস করবে?

Chapter 6

1 2 3 1এই সব কিছুর পরে যীশু গালীল সাগরের যাকে তিবিরিয়া- সাগরও বলে, তার অপর পারে চলে গেলেন। 2আর বহু মানুষ তাঁর পিছনে পিছনে যেতে লাগল, কারণ তিনি অসুস্থদের উপরে যে সব চিহ্ন- কাজ করতেন সে সব তারা দেখত। 3যীশু পর্বতের উপর উঠলেন এবং সেখানে নিজের শিষ্যদের সঙ্গে বসলেন। 4 5 6 4তখন নিস্তারপর্ব্ব, ইহূদিদের এই পর্ব্ব খুব কাছেই এসেছিল। 5যখন যীশু তাকালেন এবং দেখলেন যে বহু মানুষ তাঁর কাছে আসছে তখন তিনি ফিলিপকে বললেন, এদের খাবারের জন্য আমরা কোথায় রুটি কিনতে যাব? 6আর এই সব তিনি ফিলিপকে পরীক্ষা করার জন্য বললেন, কারণ তা তিনি নিজে জানতেন কি করবেন। 7 8 9 7ফিলিপ তাঁকে উত্তর দিলেন, ওদের জন্য দুশো দিনারের রুটি ও যথেষ্ট নয় যে, প্রত্যেকে এমনকি অল্প করে পাবে। 8তাঁর শিষ্যদের মধ্যে একজন শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয় যীশুকে বললেন, 9এখানে একটি বালক আছে যার কাছে যবের পাঁচটি রুটি এবং দুটী মাছ আছে কিন্তু এত মানুষের মধ্যে এইগুলি দিয়ে কি হবে? 10 11 12 10যীশু বললেন, "লোকদের বসিয়ে দাও"। সেই জায়গায় অনেক ঘাস ছিল। সুতরাং পুরুষেরা বসে গেল, সংখ্যায় প্রায় পাঁচ হাজার লোক হবে। 11তখন যীশু সেই রুটি কয়টি নিলেন এবং ধন্যবাদ দিয়ে যারা বসেছিল তাদেরকে ভাগ করে দিলেন; সেইভাবে মাছ কয়টিও তারা যতটা চেয়েছিল ততটা দিলেন। 12আর তারা তৃপ্ত করে খাবার পর তিনি নিজের শিষ্যদের বললেন, অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া সব জড়ো কর, যেন কিছুই নষ্ট না হয়। 13 14 15 13সুতরাং তাঁরা জড়ো করলেন এবং ঐ পাঁচটি যবের রুটি র গুঁড়াগাঁড়ায় সেই মানুষদের খাবার পর যা বেঁচেছিল তাতে বারো ঝুড়ি ভরলেন। 14তখন সেই মানুষেরা তাঁর আশ্চর্য্য কাজ দেখে বলতে লাগল, ইনি সত্যই সেই ভাববাদী যাঁর পৃথিবীতে আসার কথা আছে। 15যখন যীশু বুঝতে পারলেন যে, তারা এসে রাজা করবার জন্য জোর করে তাঁকে ধরতে আসছে, তাই তিনি আবার নিজে একাই পর্বতে চলে গেলেন। যীশু জলের উপর হাঁটলেন। 16 17 18 16যখন সন্ধ্যা হলো তাঁর শিষ্যেরা সমুদ্রতীরে চলে গেলেন। 17তারা একটি নৌকায় উঠলেন এবং সমুদ্রের অপর পারে কফরনাহূমের দিকে চলতে লাগলেন। সে সময় অন্ধকার হয়ে এসেছিল এবং যীশু তখনও তাঁদের কাছে আসেননি। 18সেই সময় ঝড় হচ্ছিল এবং সাগরে বড় বড় ঢেউ উঠছিল। 19 20 21 19এইভাবে যখন শিষ্যেরা দেড় বা দুই ক্রোশ বয়ে গেলেন তাঁরা যীশুকে দেখতে পেলেন যে তিনি সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে নৌকার কাছে আসছেন এতে তাঁরা ভয় পেলেন। 20তখন তিনি তাঁদেরকে বললেন, "এ আমি, ভয় কর না"। 21তখন তাঁরা তাঁকে নৌকায় নিতে রাজি হলেন এবং তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তক্ষনি সেই ডাঙা জায়গায় পৌঁছে গেল। 22 23 22পরের দিন, সাগরের অপর পারে যেখানে মানুষের দল দাঁড়িয়েছিল তারা দেখেছিল যে সেখানে একটি ছাড়া আর কোনো নৌকা নেই এবং যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই নৌকায় ওঠেন নি কেবল তাঁর শিষ্যেরা চলে গিয়েছিলেন। 23যদিও সেখানে কিছু নৌকা ছিল যা তিবিরিয়া থেকে এসেছিল যেখানে প্রভু ধন্যবাদ দেবার পর মানুষেরা রুটি খেয়েছিল। 24 25 24যখন মানুষের দল দেখল যে, না যীশু না শিষ্যেরা কেউই সেখানে নেই, তখন তারা সেই সব নৌকায় চড়ে যীশুর খোঁজ করতে কফরনাহূমে গেল। যীশু জীবনের রুটি । 25সাগরের অপর পারে তাঁকে পাওয়ার পর তারা বলল, রব্বি, আপনি এখানে কখন এসেছেন? 26 27 26যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, বললেন, সত্য সত্যই, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা আশ্চর্য্য কাজ দেখেছ বলে আমার খোঁজ করছ তা নয় কিন্তু সেই রুটি খেয়েছিলে ও তৃপ্ত হয়েছিলে বলে। 27যে খাবার নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য কাজ করো না, কিন্তু সেই খাবারের জন্য কাজ কর যেটা অনন্ত জীবন পর্যন্ত থাকে যা মানবপুত্র তোমাদের দেবেন, কারণ পিতা ঈশ্বর কেবল তাঁকেই মুদ্রাঙ্কিত করেছেন। 28 29 28তখন তারা তাঁকে বলল, আমরা যেন ঈশ্বরের কাজ করতে পারি, এ জন্য আমাদের কি করতে হবে? 29যীশু উত্তর দিয়ে বললেন, ঈশ্বরের কাজ এই যে, যেন তাঁতে তোমরা বিশ্বাস কর যাকে তিনি পাঠিয়েছেন। 30 31 30সুতরাং তারা তাঁকে বলল, আপনি এমনকি আশ্চর্য্য কাজ করবেন যা দেখে আমরা আপনাকে বিশ্বাস করব? আপনি কি করবেন? 31আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরূপ্রান্তে গিয়ে মান্না খেয়েছিলেন, যেমন লেখা আছে, “তিনি খাবার জন্য তাদেরকে স্বর্গ থেকে রুটি দিলেন।” 32 33 34 32যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদেরকে বলছি, মোশি তোমাদেরকে স্বর্গ থেকে তো সেই রুটি দেননি, কিন্তু আমার পিতাই তোমাদের কে স্বর্গ থেকে প্রকৃত রুটি দিচ্ছেন। 33কারণ ঈশ্বরীয় রুটি হলো যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে এবং পৃথিবীর মানুষকে জীবন দেন। 34সুতরাং তারা তাঁকে বলল, প্রভু, সেই রুটি সবসময় আমাদের দিন। 35 36 37 35যীশু তাদের বললেন, আমিই হলাম সেই জীবনের রুটি । যে আমার কাছে আসে তার আর খিদে হবে না এবং যে আমার উপর বিশ্বাস করে তার আর কখনো পিপাসা পাবে না। 36যদিও আমি তোমাদের বলেছি যে, তোমরা আমাকে দেখেছ এবং এখনো বিশ্বাস কর না। 37পিতা যে সব আমাকে দেন সে সব আমার কাছেই আসবে এবং যে আমার কাছে আসবে তাকে আমি কোন ভাবেই বাইরে ফেলে দেবো না। 38 39 40 38কারণ আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি আমার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য নয় কিন্তু তাঁরই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 39এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা হলো যে তিনি আমাকে যে যাদের দিয়েছেন, তার কিছুই যেন না হারাই, কিন্তু শেষ দিনে যেন তাদের জীবিত করে তুলি। 40কারণ আমার পিতার ইচ্ছা হলো, যে কেউ পুত্রকে দেখে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে সে যেন অনন্ত জীবন পায় এবং আমিই তাকে শেষ দিনে জীবিত করব। 41 42 41তখন ইহূদি নেতারা তাঁর সম্পর্কে বকবক করতে লাগল, কারণ তিনি বলেছিলেন, "আমিই সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে"। 42তারা বলল, এ যোষেফের পুত্র সেই যীশু নয় কি, যার পিতা মাতাকে আমরা জানি? এখন সে কেমন করে বলে, আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি? 43 44 45 43যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে বকবক করা বন্ধ কর। 44কেউ আমার কাছে আসতে পারবে না যতক্ষণ না পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন ও তিনি আকর্ষণ করছেন, আর আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলবো। 45ভাববাদীদের বইতে লেখা আছে, “তারা সবাই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা পাবে।” যে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে, সেই আমার কাছে আসে। 46 47 46কেউ যে পিতাকে দেখেছে তা নয়, শুধুমাত্র যিনি ঈশ্বর থেকে এসেছেন কেবল তিনিই পিতাকে দেখেছেন। 47সত্য, সত্যই বলছি যে বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন পায়। 48 49 48আমিই জীবনের রুটি । 49তোমাদের পূর্বপুরুষেরা মরূপ্রান্তে মান্না খেয়েছিল এবং তারা মরে গিয়েছে। 50 51 50এই হলো সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে যেন মানুষেরা এর কিছুটা খায় এবং না মরে। 51আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। কেউ যদি এই রুটি র কিছুটা খায় তবে সে চিরকাল জীবিত থাকবে। আমি যে রুটি দেব সেটা আমার মাংস, পৃথিবীর মানুষের জীবনের জন্য। 52 53 52ইহূদিরা খুব রেগে গেল ও একে অপরের সঙ্গে তর্ক করে বলতে লাগলো, কেমন করে ইনি আমাদেরকে খাবার জন্য নিজের মাংস দেবে? 53যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা মানবপুত্রের মাংস খাবে ও তাঁর রক্ত পান করবে তোমাদের নিজেদের জীবন পাবে না। 54 55 56 54যে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করব। 55কারণ আমার মাংস সত্য খাবার এবং আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়। 56যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে থাকি। 57 58 59 57যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন এবং পিতার জন্যই আমি বেঁচে আছি, ঠিক সেইভাবে যে কেউ আমাকে খায়, সেও আমার মাধ্যমে জীবিত থাকবে। 58এই হলো সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে, পূর্বপুরুষেরা যেমন খেয়েছিল এবং মরেছিল সেই রকম নয়। এই রুটি যে খাবে সে সে চিরকাল বেঁচে থাকবে। 59যীশু এই সব কথা কফরনাহূমে সমাজঘরে উপদেশ দেবার সময় বললেন। মরূপ্রান্তে যীশুর সঙ্গে শিষ্য। 60 61 60তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে এই কথা শুনে বলল, এইগুলি কঠিন উপদেশ, কে এইগুলি গ্রহণ করবে? 61তাঁর শিষ্যেরা এই নিয়ে তর্ক করছে যীশু তা নিজে অন্তরে জানতে পেরে তাদের বললেন, "এই কথায় কি তোমরা বিরক্ত হচ্ছ"? 62 63 62তখন কি ভাববে? যখন মানবপুত্র আগে যেখানে ছিলেন সেখানে তোমরা তাঁকে উঠে যেতে দেখবে? 63পবিত্র আত্মা জীবন দেন, মাংস কিছু উপকার দেয় না। আমি তোমাদের যে সব কথা বলেছি তা হলো আত্মা এবং জীবন। 64 65 64এখনও তোমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বিশ্বাস করে না। কারণ যীশু প্রথম থেকে জানতেন কারা বিশ্বাস করে না এবং কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে। 65তিনি বললেন, এই জন্য আমি তোমাদেরকে বলেছি, যতক্ষণ না পিতার কাছ থেকে ক্ষমতা দেওয়া হয়, কেউ আমার কাছে আসতে পারে না। 66 67 68 69 66এই সবের পরে তাঁর অনেক শিষ্য ফিরে গেল এবং তাঁর সঙ্গে আর তারা চলাফেরা করল না। 67তখন যীশু সেই বারো জনকে বললেন, তোমরাও কি দূরে চলে যেতে চাও? 68শিমোন পিতর তাঁকে উত্তর দিলেন, প্রভু, কার কাছে আমরা যাব? আপনার কাছে অনন্ত জীবনের বাক্য আছে; 69এবং আমরা বিশ্বাস করেছি ও জেনেছি যে আপনি হলেন ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি। 70 71 70যীশু তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের এই যে বারো জনকে কি আমি মনোনীত করে নিই নি? এবং তোমাদের মধ্যে একজন শয়তান আছে। 71এই কথা তিনি ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের পুত্র যিহূদার সমন্ধে বললেন, কারণ সে সেই বারো জনের মধ্যে একজন ছিল যে তাঁকে বেইমানি করে ধরিয়ে দেবে।

Chapter 7

1 2 1এই সবের পরে যীশু গালীলের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে লাগলেন, কারণ ইহূদিরা তাঁকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল বলে তিনি যিহূদিয়াতে যেতে চাইলেন না। 2তখন ইহূদিদের কুটিরবাস পর্বের সময় প্রায় এসে গিয়েছিল। 3 4 3অতএব তাঁর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিয়াতে চলে যাও; যেন তুমি যে সব কাজ করছ তা তোমার শিষ্যেরাও দেখতে পায়। 4কেউ গোপনে কাজ করে না যদি সে নিজেকে অপরের কাছে খোলাখুলি জানাতে চায়। যদি তুমি এই সব কাজ কর তবে নিজেকে জগতের মানুষের কাছে দেখাও। 5 6 7 5কারণ এমনকি তাঁর ভাইয়েরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না। 6তখন যীশু তাদের বললেন, আমার সময় এখনও আসেনি, কিন্তু তোমাদের সময় সবসময় প্রস্তুত। 7পৃথিবীর মানুষ তোমাদেরকে ঘৃণা করতে পারে না কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে কারণ আমি তার সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিই যে তার সব কাজ অসৎ। 8 9 8তোমরাই তো উত্সবে যাও; আমি এখন এই উত্সবে যাব না, কারণ আমার সময় এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। 9তাদেরকে এই কথা বলার পর তিনি গালীলে থাকলেন। 10 11 10যদিও তাঁর ভাইয়েরা উত্সবে যাবার পর তিনিও গেলেন, খোলাখুলি ভাবে নয় কিন্তু গোপনে গেলেন। 11ইহূদিরা উত্সবের মধ্যে তাঁর খোঁজ করল এবং বলল, তিনি কোথায়? 12 13 12ভিড়ের মধ্যে মানুষেরা তাঁর সম্পর্কে অনেক আলোচনা করতে লাগলো। অনেকে বলল, তিনি একজন ভাল লোক; আবার কেউ বলল, না, তিনি মানুষদেরকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। 13কিন্তু ইহূদিদের ভয়ে কেউ তাঁর সম্পর্কে খোলাখুলি কিছু বলল না। ভোজের সময় যীশুর শিক্ষা। 14 15 16 14যখন উত্সবের অর্ধেক সময় পার হয়ে গেল তখন যীশু উপাসনা ঘরে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন। 15ইহূদিরা আশ্চর্য্য হয়ে গেল এবং বলতে লাগলো, এই মানুষটি শিক্ষা না নিয়ে কিভাবে এই রকম শাস্ত্র জ্ঞানী হয়ে উঠল? 16যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, আমার শিক্ষা আমার নয় কিন্তু তাঁর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 17 18 17যদি কেউ তাঁর ইচ্ছা পালন করবে মনে করে, সে এই শিক্ষার বিষয় জানতে পারবে, এই সকল ঈশ্বর থেকে এসেছে কিনা, না আমি নিজের থেকে বলি। 18যারা নিজের থেকে বলে তারা নিজেদেরই গৌরব খোঁজ করে কিন্তু যারা তাঁর সম্মান খোঁজ করে যিনি তাদের পাঠিয়েছেন তিনিই সত্য এবং তাঁতে কোন অধর্ম নেই। John 7:17–18 — বাংলা (ulb) 19 20 19মোশি কি তোমাদেরকে কোনো নিয়ম কানুন দেননি? যদিও তোমাদের মধ্যে কেউই এখনো সেই নিয়ম পালন করে না। কেন তোমরা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছ? 20সেই মানুষের দল উত্তর দিল, তোমাকে ভূতে ধরেছে, কে তোমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে? 21 22 21যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, আমি একটা কাজ করেছি, আর সেজন্য তোমরা সকলে আশ্চর্য্য হচ্ছ। 22মোশি তোমাদেরকে ত্বকছেদ করার নিয়ম দিয়েছেন, তা যে মোশি থেকে নয় কিন্তু পূর্বপুরুষদের থেকে হয়েছে এবং তোমরা বিশ্রামবারে শিশুদের ত্বকছেদ করে থাক। 23 24 23মোশির নিয়ম যেন না ভাঙে সেইজন্য যদি বিশ্রামবারে মানুষের ত্বকছেদ করা হয়, তবে আমি বিশ্রামবারে একজন মানুষকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করেছি বলে আমার উপরে কেন রাগ করছ? 24বাইরের চেহারা দেখে বিচার করো না কিন্তু ন্যায়ভাবে বিচার কর। যীশুই কি খ্রীষ্ট? 25 26 27 25যিরূশালেম বসবাসকারীদের মধ্যে থেকে কয়েক জন বলল, এই কি সে নয় যাকে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল? 26আর দেখ, সে তো খোলাখুলি ভাবে কথা বলছে আর তারা ওনাকে কিছুই বলছে না। কারণ এটা হতে পারে না যে শাসকেরা জানত যে ইনিই সেই খ্রীষ্ট, তাই নয় কি? 27কিন্তু আমরা জানি এই মানুষটি কোথা থেকে এলো; কিন্তু খ্রীষ্ট যখন আসেন তখন তিনি কোথা থেকে আসেন তা কেউ জানে না। 28 29 28যীশু মন্দিরে খুব চিত্কার করে উপদেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে চেন এবং আমি কোথা থেকে এসেছি তাও জান। আমি নিজে থেকে আসিনি কিন্তু আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি সত্য যাকে তোমরা চেন না। 29আমি তাঁকে জানি কারণ আমি তাঁর কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন। 30 31 32 30তারা তাঁকে ধরার জন্য চেষ্টা করছিল কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না কারণ তখনও তাঁর সেই সময় আসেনি। 31যদিও মানুষের দলের মধ্যে থেকে অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল এবং বলল, খ্রীষ্ট যখন আসবেন তখন এই মানুষটির করা কাজ থেকে কি তিনি বেশি আশ্চর্য্য কাজ করবেন? 32ফরীশীরা তাঁর সম্পর্কে জনগনের মধ্যে এই সব কথা ফিসফিস করে বলতে শুনল এবং প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা তাঁকে ধরে আনবার জন্য কয়েক জন আধিকারিককে পাঠিয়ে দিল। 33 34 33তখন যীশু বললেন, আমি এখন অল্প সময়ের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি এবং তারপর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে চলে যাব। 34তোমরা আমাকে খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবে না; আমি যেখানে যাব সেখানে তোমরা আসতে পারবে না। 35 36 35তখন ইহূদিরা একে অপরকে বলতে লাগল, এই মানুষটি কোথায় যাবে যে আমরা তাকে খুঁজে পাব না? তিনি কি গ্রীকদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন ইহূদি মানুষের কাছে যাবে এবং সেই সকল মানুষদের শিক্ষা দেবেন? 36তিনি যে কথা বললেন, "আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবে না এবং আমি যেখানে যাই সেখানে তোমরা আসতে পারবে না" এটা কি কথা? 37 38 37এখন শেষ দিন, উত্সবের মহান দিন, যীশু দাঁড়িয়ে চিত্কার করে বললেন, কারুর যদি পিপাসা পায় তবে আমার কাছে এসে পান করুক। 38যে কেউ আমাতে বিশ্বাস করে, যেমন শাস্ত্রে বলা আছে, তার হৃদয়ের মধ্য থেকে জীবন জলের নদী বইবে। 39 39কিন্তু তিনি পবিত্র আত্মার সমন্ধে এই কথা বললেন, যারা তাঁতে বিশ্বাস করত তারা সেই আত্মাকে পাবে, তখনও সেই আত্মা দেওয়া হয়নি কারণ সেই সময় পর্যন্ত যীশুকে মহিমান্বিত করা হয়নি। 40 41 42 40যখন জনগনের মধ্য থেকে অনেকে এই কথা শুনল তখন তারা বলল ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী। 41অনেকে বলল, ইনি হলেন সেই খ্রীষ্ট। কিন্তু কেউ কেউ বলল, কেন? খ্রীষ্ট কি গালীল থেকে আসবেন? 42শাস্ত্রের বাক্যে কি বলে নি, খ্রীষ্ট দায়ূদের বংশ থেকে এবং দায়ূদ যেখানে ছিলেন সেই বৈৎলেহম গ্রাম থেকে আসবেন? 43 44 43এইভাবে জনগনের মধ্যে যীশুর বিষয় নিয়ে মতভেদ হলো। 44তাদের মধ্যে কিছু লোক তাঁকে ধরবে বলে ঠিক করলো কিন্তু তার গায়ে কেউই হাত দিল না। ইহূদি নেতাদের অবিশ্বাস। 45 46 45তখন আধিকারিকরা প্রধান যাজকদের ও ফরীশীদের কাছে ফিরে আসলে তাঁরা তাদের বললেন তাকে নিয়ে আসনি কেন? 46আধিকারিকরা উত্তর দিয়ে বলল, এই মানুষটি যেভাবে কথা বলেন অন্য কোন মানুষ কখনও এই রকম কথা বলেননি। 47 48 49 47ফরীশীরা তাদেরকে উত্তর দিল, তোমরাও কি বিপথে চালিত হলে? 48কোনো শাসকেরা অথবা কোনো ফরীশী কি তাঁতে বিশ্বাস করেছেন? 49কিন্তু এই যে মানুষের দল কোনো নিয়ম জানে না এরা অভিশাপ গ্রস্থ। 50 51 52 50নীকদীম ফরীশীদের মধ্যে একজন, যিনি আগে যীশুর কাছে এসেছিলেন, তিনি তাদেরকে বললেন, 51আগে কোনো মানুষের তার নিজের কথা না শুনে এবং সে কি করে তা না জেনে, আমাদের আইন কানুন কি কাহারও বিচার করে? 52তারা উত্তর দিয়ে তাঁকে বলল, তুমিও কি গালীল থেকে এসেছ? খোঁজ নিয়ে দেখ গালীল থেকে কোন ভাববাদী আসে না। 53 53তখন প্রত্যেকে তাদের নিজের বাড়িতে চলে গেলেন।

Chapter 8

1 2 3 ১ ঈসা জৈতুন পাহাড়ে চলে গিয়েছিলেন। ২ খুব সকালে তিনি আবার বাইতুল মোকাদ্দেসে ফিরলেন, তখন সব মানুষেরা তাঁর কাছে আসল এবং তিনি তাদেরকে নিয়ে বসে শিক্ষা দিতে লাগলেন। ৩ আলেম ও ফরীশীরা জেনা করেছে এমন একজন স্ত্রীলোককে ধরে তাঁর কাছে আনলো ও তাদের মাঝখানে দাঁড় করালো। 4 5 6 ৪ তারপর তারা বলল, ” হুজুর, এই স্ত্রীলোকটী জেনা করে ধরা পড়েছে। ৫ মুসা (আঃ) এর শরিয়তে এই রকম গুনাহগারকে পাথর মেরে হত্যা করার বিধান তিনি আমাদের দিয়েছেন; একই অপরাধে আপনার বিধান কি ?” ৬ তারা তাঁর পরীক্ষা নেবার জন্য এই কথা বললো, যেন তাঁকে দোষ দেবার কোন কারণ খুঁজে পায়। কিন্তু ঈসা মাথা নিচু করে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন। 7 8 ৭ যখন তারা বারবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, তখন তিনি মাথা তুলে তাদেরকে বললেন" তোমাদের মধ্যে যার কোনো গুনাহ নেই, তাকেই প্রথমে তার উপরে পাথর মারতে বল।” ৮ এরপর তিনি আবার মাথা নিচু করে তাঁর আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন। 9 10 11 ৯ তারা এই কথা শোনার পর, তাদের বুড়ো থেকে শুরু করে এক এক করে সবাই চলে গেল, ঈসা কেবল একাই রইলেন আর সেই স্ত্রীলোকটী তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিল। ১০ ঈসা তখন মাথা তুলে বললেন, ”হে নারী, তারা কোথায়? কেউ কি তোমাকে শাস্তির উপযুক্ত মনে করে নি?” ১১ স্ত্রীলোকটি জবাব দিল, ”না হুজুর, কেউই করে নি।” তখন ঈসা বললেন, ”আমিও তোমাকে গুনাহগার মনে করছি না। যাও, আর গুনাহ করো না।” 12 13 ১২ পরে ঈসা আবার লোকদের বললেন, তিনি বললেন, "আমিই দুনিয়ার নূর; যে আমার শরিয়তে চলে সে কখনো গুনাহে পরবে না কিন্তু জীবনের নূর পাবে।” ১৩ এতে ফরীশীরা ঈসাকে বললো, ”তোমার সাক্ষ্য সত্যি নয়, কারণ তুমি নিজের পক্ষে নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছ।” 14 15 16 ১৪ ঈসা তাদের জবাবে বললেন, "যদিও আমি নিজের পক্ষে নিজেই সাক্ষ্য দেই তবুও আমার সাক্ষ্য সত্যি। কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি আর কোথায় বা যাব তা জানি; কিন্তু তোমরা জানো না আমি কোথা থেকে আসেছি বা কোথায় যাব। ১৫ তোমরা তোমাদের মতো করে বিচার করছো কিন্ত আমি করি না। ১৬ অবশ্য আমি যদি বিচার করি তবে আমার বিচার সত্যি কারণ আমি একা নই, বরং আমার মাবুদ সঙ্গে আছেন যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 17 18 ১৭ হ্যা, তোমাদের শরিয়তেও লেখা আছে যে, যদি দুই জন মানুষের সাক্ষ্য একই হয় তবে তা সত্যি। ১৮ আমিই সেই ব্যাক্তি যে নিজেই নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দেই আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সেই পিতাও আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেন।” 19 20 ১৯ ফরীশীরা তাঁকে বললো, ”তোমার পিতা কোথায়?” ঈসা জবাব দিলেন, "তোমরা আমাকে চিন না আর আমার পিতাকেও চিন না; যদি তোমরা আমাকে চিনতে তবে আমার পিতাকেও চিনতে পারতে।” ২০ বায়তুল মোকাদ্দেসে শিক্ষা দেবার সময়ে দান দেবার জায়গায় ঈসা এসব কথা বললেন কিন্ত তখনও তাঁর সময় হয়নি বলে কেউ তাঁকে ধরল না। 21 22 ২১ ঈসা তাই আবারো ফরীশীদের বললেন, "আমি চলে যাচ্ছি, তোমরা আমাকে খোঁজ করবে এবং তোমাদের গুনাহে মরবে। আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না"। ২২ ইহূদি নেতারা তখন জানতে চাইল , ”সে আত্মহত্যা করবে না কি? কারণ সে বলছে, ”আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে তোমরা আসতে পারবে না?” 23 24 ২৩ ঈসা তাদেরকে বললেন, আমি এসেছি বেহেশত থেকে আর তোমরা এসেছো এই জমিন থেকে, তোমরা এই জগতের কিন্তু আমি এই জগতের নই। ২৪ তাই আমি তোমাদের বলেছি, তোমরা তোমাদের গুনাহে মরবে। তোমরা যতক্ষণ না বিশ্বাস করবে আমিই সেই মসিহ, তাহলে তোমরা তোমাদের গুনাহেই মরবে। 25 26 27 ২৫ এতে নেতারা ঈসাকে জিজ্ঞেস করলো, ”তুমি কে?” তিনি তাদেরকে বললেন, "প্রথম থেকে আমি তোমাদের যা বলছি আমি তা-ই।” ২৬ তোমাদের সম্বন্ধে বলবার ও বিচার করে দেখবার জন্য আমার কাছে অনেক বিষয়ই আছে। যাহোক, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি সত্য এবং আমি তাঁর কাছ থেকে যা শুনেছি সেই সবই আমি জগতে বলছি।” ২৭ তিনি তাদেরকে পিতার সমন্ধে বলছিলেন তা তারা বুঝতে পারে নি। 28 29 30 ২৮ এজন্য ঈসা বললেন, ”যখন তোমরা মরিয়মপুত্রকে ক্রূশে তুলবে তখন তোমরা জানতে পারবে যে আমিই তিনি, যেনে রাখ আমি নিজে থেকে কিছুই করি না, বরং পিতা আমাকে যে শিক্ষা দিয়েছেন আমি সেই সব কথাই বলি। ২৯ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনিই আমার সঙ্গে আছেন এবং তিনি আমাকে একা ছেড়ে দেননি, কারণ তিনি যে কাজে সন্তুষ্ট হন সব সময় আমি সেই কাজই করি।” ৩০ ঈসা যখন এই সব কথা বলছিলেন তখন অনেকেই তাঁর উপরে ঈমান আনল। 31 32 33 ৩১ যে ইহূদিরা তাঁর উপরে ঈমান এনেছিল ঈসা তাঁদের বললেন, "যদি তোমরা আমার কথা মেনে চল, তাহলে তোমরা সত্যিই আমার উম্মত; ৩২ তখন তোমরা সত্য জানতে পারবে ও সেই সত্যই তোমাদের নাজাত করবে।” ৩৩ তারা তাঁকে উত্তর দিল, আমরা অব্রাহামের বংশের লোক এবং কখনও কারও গোলাম হইনি; আপনি কেমন করে বলছেন যে, ”তোমাদের নাজাত করা হবে?” 34 35 36 ৩৪ ঈসা তাঁদের জবাব দিলেন, ”সত্যি, আমি তোমাদের সত্যিই বলছি , যারা গুনাহে পরে থাকে তাাঁরা সবাই গুনাহের গোলাম। ৩৫ গোলাম চিরকাল বাড়িতে থাকে না কিন্তু পুত্র চিরকাল থাকে। ৩৬ তাই পুত্র যদি তোমাদের নাজাত করে তবে তোমরা সত্যিই রক্ষা পাবে। 37 38 ৩৭ আমি জানি তোমরা ইব্রাহিমের বংশের লোক; তবুও তোমরা আমাকে হত্যা করতে চাইছো, কারণ আমার কথা তোমরা বিশ্বাস করতে পারছো না। ৩৮আমি আমার পিতার কাছে যা দেখেছি সেই বিষয়েই বলি; আর তোমরা তোমাদের পিতার কাছ থেকে যা শুনেছ, তা-ই করে থাক।” 39 40 41 ৩৯ এতে সেই ইহুদী নেতারা ঈসাকে বলল, ”ইব্রাহিমই আমাদের পিতা।” ঈসা তাদেরকে বললেন, "যদি তোমরা ইব্রাহিমের সন্তান হতে, তবে তোমরা ইব্রাহিমের মতোই কাজ করতে। ৪০ আল্লাহর কাছ থেকে আমি যে সত্য জেনেছি তা-ই তোমাদেরকে বলেছি, আর তবুও তোমরা আমাকে হত্যা করতে চাইছো। কিন্ত ইব্রাহিম এইরকম ছিলেন না। ৪১ তোমরা তোমাদের পিতারই কাজ করো। ”তাঁরা ঈসাকে বলল, আমরা তো জারজ নই; আমাদের একজনই পিতা আছেন, তিনি আল্লাহ।” 42 43 44 ৪২ ঈসা তাঁদের বললেন, ”সত্যি যদি আল্লাহ তোমাদের পিতা হতেন, তবে তোমরা আমাকে মহব্বত করতে, কারণ আমি আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি আর এখন তোমাদের মধ্যে আছি; আর আমি নিজ থেকে আসিনি বরং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন। ৪৩ তোমরা কেন আমার কথা বুঝতে পার না? তার কারণ হলো, তোমরা আমার কথা মন দিয়ে শুন না। ৪৪ ইবলিসই তোমাদের পিতা আর তোমরা তারই সন্তান, সেজন্য তোমরা তার ইচ্ছা পূরণ করতে চাও। ইবলিস প্রথম থেকেই খুনি এবং সে সত্যের পক্ষে থাকে না কারণ তার মধ্যে কোনো সত্য নেই। সে যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন সে নিজের স্বভাব থেকেই বলে কারণ সে মিথ্যাবাদী এবং সমস্ত মিথ্যার জন্ম তাঁর মাধ্যমেই হয়েছে। 45 46 47 ৪৫ অথচ আমি সত্য কথা বলি বলে তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না। ৪৬ তোমাদের মধ্যে কে আমাকে গুনাহগার বলে প্রমাণ করতে পারে? যদি আমি সত্যকথা বলি, তবে কেন তোমরা আমার উপরে ঈমান আনছো না? ৪৭ "যে আল্লাহর সে আল্লাহর সব কথা শোনে; তোমরা আল্লাহর নও তাই আল্লাহর কথা শোন না। 48 49 ৪৮ ইহূদি নেতারা জবাব দিল, আমরা কি সত্য বলিনি যে তুমি একজন শমরীয় এবং তোমাকে ভূতে ধরেছে? ৪৯ জবাবে ঈসা বললেন, "আমাকে ভূতে ধরেনি কিন্তু আমি আমার পিতাকে সম্মান করি, অথচ তোমরা আমাকে অসম্মান কর। 50 51 ৫০ আমি আমার নিজের প্রশংসার চেষ্টা করি না; কিন্ত একজন আছেন যিনি আমাকে সন্মান দান করেন আর তিনিই বিচারকর্তা। ৫১ সত্যি, সত্যিই আমি তোমাদের বলছি, যদি কেউ আমার উপরে ঈমান আনে, তবে সে কখনও মরবে না।” 52 53 ৫২ ইহূদি নেতারা তাঁকে বলল, ”এবার আমরা সত্যিই বুঝলাম যে, তোমাকে ভূতেই ধরেছে। ইব্রাহিম ও নবীরা মারা গেছেন; অথচ তুমি বলছ, যদি কেউ আমার উপরে ঈমান আনে সে কখনও মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে না।” ৫৩ তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম থেকেও মহান নও যিনি মারা গেছেন, তাই না? নবীরাও মারা গেছেন। তুমি নিজেকে কি মনে কর?” 54 55 56 ৫৪ জবাবে ঈসা বললেন, ”যদি আমি নিজের প্রশংসা নিজেই করি,তবে তার কোন দাম নেই ; আমার পিতা, যাঁকে তোমরা তোমাদের আল্লাহ বলে দাবি করো তিনিই আমাকে সন্মান দান করেন। ৫৫ তোমরা তাঁকে জান না; কিন্তু আমি তাঁকে জানি। যদি আমি বলি, ’তাঁকে জানি না,’ তবে তোমাদের মত আমিও একজন মিথ্যাবাদী হব। কিন্ত আমি তাঁকে জানি এবং তাঁর কথা মেনেও চলি। ৫৬ তোমাদের পিতা ইব্রাহিম আমারই দিন দেখবার আশায় আনন্দ করেছিলেন; তিনি তা দেখেছিলেন আর খুশীও হয়েছিলেন।” 57 58 59 ৫৭ তখন ইহূদি নেতারা তাঁকে বলল, ”তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয়নি, আর তুমি ইব্রাহিমকে কি দেখেছ?” ৫৮ ইসা তাঁদের বললেন, সত্য, সত্যই, আমি তোমাদেরকে বলছি, ইব্রাহিম জন্মগ্রহন করবার আগে থেকেই আমি আছি।” ৫৯ এই কথা শুনে সেই নেতারা তাঁকে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল কিন্তু ঈসা লুকিয়ে বাইতুল-মোকাদ্দেস থেকে বের হয়ে গেলেন।

Chapter 9

1 2 ১ পথে যেতে যেতে ঈসা একজন জন্মান্ধ লোককে দেখতে পেলেন। ২ তখন সাহাবীরা ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ”হুজুর, কার গুনাহে এই লোকটি অন্ধ হয়ে জন্মেছে, তার নিজের, না তার পিতা-মাতার?” 3 4 5 ৩ ঈসা জবাব দিলেন, ”গুনাহ সে নিজেও করে নি, তার পিতা-মাতাও করে নি, এটা হয়েছে যেন আল্লাহর কাজ তার মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়। ৪ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সময় থাকতেই তাঁর কাজ আমরা করবো। দুঃসময় আসছে যখন কেউ কাজ করতে পারবে না। ৫ যতদিন আমি দুনিয়াতে আছি, ততদিন আমিই দুনিয়ার নূর।” 6 7 ৬ এই কথা বলার পর, ঈসা মাটিতে থুথু ফেললেন, সেই থুথু দিয়ে কাদা বানালেন, অতঃপর অন্ধ লোকটির চোখে সেই কাদা লাগিয়ে দিলেন। ৭ তারপর তাঁকে বললেন, ”যাও শীলোহের পুকুরে গিয়ে ধুয়ে ফেল” (শীলোহ অর্থ ”প্রেরিত বা পাঠানো হলো”)। তাই সে চলে গেল, চোখ ধুয়ে ফেলল এবং চোখে দেখতে পেয়ে ফিরে আসল। 8 9 ৮ এ দেখে লোকটির প্রতিবেশীরা এবং যারা তাকে আগে ভিক্ষা করতে দেখেছিল তারা সবাই বলতে লাগল, ”এ কি সেই লোকটি নয় যে বসে ভিক্ষা করত?” ৯ কেউ কেউ বলল, “এ সেই লোক।” আবার অন্যরা বলল, ”না, সে নয় তবে সে দেখতে তারই মত।” অথচ সে বার বার বলছিল, 'আমিই দৃষ্টি ফিরে পাওয়া সেই অন্ধ ভিখারী।” 10 11 12 ১০ একসময় তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করলো, ”তাহলে কিভাবে তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরে পেলে?” ১১ সে জবাব দিল, ”ঈসা নামের সেই লোকটি একটু কাদা বানিয়ে আমার চোখের উপরে লাগিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন, ’শীলোহের পুকুরে গিয়ে ধুয়ে ফেল।’ তাই আমি পুকুরে গিয়ে ধুয়ে ফেলার সাথে সাথেই দৃষ্টি ফিরে পেলাম।” ১২ তখন তারা জিজ্ঞেস করলো, “সে এখন কোথায়?” সে বললো, “এখন কোথায় সে বলতে পারবো না।” 13 14 15 ১৩ যে লোকটি অন্ধ ছিল লোকেরা তাকে ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল। ১৪ যে দিন ঈসা কাদা লাগিয়ে তার দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেন সেই দিনটি ছিল বিশ্রামবার। ১৫ তখন ফরীশীরাও তাকে জিজ্ঞাসা করলো কিভাবে সে দৃষ্টি ফিরে পেল। লোকটি ফরীশীদের বলল, ”তিনি আমার চোখের উপরে কাদা লাগিয়ে দিলেন, পরে আমি ধুয়ে ফেললাম এবং তখন থেকেই আমি দেখতে পাচ্ছি।” 16 17 18 ১৬ তখন ফরীশীদের মধ্যে কয়েকজন বলল, ঐ মানুষটি আল্লাহর কাছ থেকে থেকে আসেনি, কারণ সে বিশ্রামবার পালন করে না।” অন্যেরা বলল, ”একজন গুনাহগার কেমন করে এমন অলৌকিক কাজ করতে পারে?” এভাবে তাদের মধ্যে মতের অমিল দেখা দিল। ১৭ তাই তারা আবারো সেই অন্ধ লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলো, ”তুমি তার সম্পর্কে কিরুপ ধারনা করো, কেননা সে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছে?” সেই অন্ধ লোকটি বলল, ”তিনি একজন রাসুল”। ১৮ ইহূদিরা নেতারা লোকটির পিতা-মাতাকে ডেকে জিজ্ঞাসা না করা পর্যন্ত নিশ্চিত হলো না যে, সে অগে অন্ধ ছিল আর এখন দেখতে পাচ্ছে। 19 20 21 ১৯ তারা লোকটির পিতা-মাতাকে জিজ্ঞাসা করলো, ”এই কি তোমাদের সেই ছেলে যে জন্মান্ধ তোমরা বলেছিলে? তাহলে এখন সে কিভাবে দেখতে পাচ্ছে?” ২০ তাঁর পিতা-মাতা জবাব দিলো, ” সে আমাদেরই ছেলে এবং সে অন্ধ হয়েই জন্মেছিল। ২১ সে এখন কিভাবে দেখতে পাচ্ছে, তা আমরা জানি না এবং কে-ই বা এর দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে তাকেও চিনি না। ছেলেকেই জিজ্ঞাসা করুন, সে এখন সাবালক হয়েছে। নিজের কথা নিজেই বলুক।” 22 23 ২২ তার পিতা-মাতা ইহূদি নেতাদের এই কথা বলল, কেননা তারা তাদের ভয় করত। অপরদিকে ইহূদি নেতারা আগেই ঠিক করেছিল যে, যদি কেউ ঈসাকে মসীহ্ বলে স্বীকার করে তবে তাকে ইহূদি সমাজচ্যুত করা হবে। ২৩ এইসব কারণে, তার পিতা-মাতা বলেছিল, ”সে সাবালক, তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।” 24 25 ২৪ তাই ইহূদি নেতারা দ্বিতীয়বার দৃষ্টি ফিরে পাওয়া লোকটিকে ডেকে বলল, ” মহান আল্লাহর গৌরব কর; আমরা জানি যে, সে একজন গুনাহগার।” ২৫ তখন সেই লোকটি জবাব দিল, ”তিনি গুনাহগার কি না আমি জানি না। তবে একটা বিষয় বুঝি যে; আমি আগে অন্ধ ছিলাম আর এখন দেখতে পাচ্ছি।” 26 27 ২৬ তাঁরা আবারো জিজ্ঞেস করলো, ”সে কি করেছিল? কিভাবে সে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিল?” ২৭ সে এবার বললো, ”আমি তো আপনাদেরকে আগেই বলেছি কিন্ত আপনারা শোনেন নি! তাহলে কেন সেই একই কথা আবার শুনতে চাচ্ছেন? আপনারা তো তাঁর উম্মত হতে চান না, চান কি?” 28 29 ২৮ তখন তারা তাঁকে বকাঝকা করে বলল, ”তুই তার উম্মত কিন্তু আমরা মূসা নবীর উম্মত। ২৯ আমরা জানি আল্লাহ মূসা নবীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন কিন্তু ঐ লোক কোথা থেকে এসেছে তা আমরা জানি না।” 30 31 ৩০ তখন সেই লোকটি জবাবে তাদেরকে বলল, ”এটাই আশ্চর্য্য বিষয় যে, আপনারা জানেন না তিনি কোথা থেকে এসেছেন অথচ তিনি আমার দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ৩১ আমরা জানি আল্লাহ গুনাহগারদের কথা শোনেন না, কিন্তু যদি কেউ আল্লাহ ভক্ত হয় ও আল্লাহর ইচ্ছামতো চলে, তখন আল্লাহ তার কথা শোনেন। 32 33 34 ৩২ দুনিয়া সৃষ্টির পর থেকে কখনও শোনা যায় নি যে, জন্মান্ধ কেউ তার দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেয়েছে। ৩৩ যদি ঐ লোকটি আল্লাহর কাছ থেকে থেকে না আসতেন, তবে তিনি কিছুই করতে পারতেন না।” ৩৪ তারা জবাবে বলল, ”তোর জন্ম হয়েছিল পুরোপুরি গুনাহের মধ্যে, আর তুই আমাদের জ্ঞাণ দিচ্ছিস?” এরপর তারা তাঁকে ইহূদি সমাজ থেকে বের করে দিল। 35 36 37 38 ৩৫ ঈসা শুনলেন যে, নেতারা লোকটিকে ইহূদি সমাজ থেকে বের করে দিয়েছে। তিনি তাঁকে খুঁজে বের করলেন এবং বললেন, ”তুমি কি ইবনে আদমের উপরে ঈমান এনেছো?” ৩৬ সে জবাব দিল, ”হুজুর, তিনি কে, যেন আমি তাঁর উপরে ঈমান আনতে পারি?” ৩৭ ঈসা তাঁকে বললেন, "তুমি তাঁকে দেখেছ, আর তিনিই তোমার সঙ্গে কথা বলছেন।” ৩৮ তখন লোকটি বলল, ”হুজুর,আমি ঈমান আনলাম,” এই বলে সে ঈসাকে সেজদা করল। 39 40 41 ৩৯ তখন ঈসা বললেন, ”আমি এই দুনিয়াতে বিচার করতে এসেছি, যারা দেখতে পায় না তারা যেন দেখতে পায় এবং যারা দেখে তারা যেন অন্ধ হয়।” ৪০ ফরীশীদের মধ্যে কয়েকজন ঈসার সঙ্গে ছিল, তারা ঈসাকে জিজ্ঞেস করলো, তবে আমরাও কি অন্ধ? ৪১ ঈসা তাঁদেরকে বললেন, ”যদি তোমরা অন্ধ হতে তবে তোমাদের গুনাহ থাকত না, কিন্ত তোমরা বলছ যে, ’আমরা দেখতে পাই,’ অতএব তোমরা গুনাহগার।”

Chapter 10

1 2 ১ ”আমি তোমাদের সত্যি, সত্যিই বলছি, যে, যদি কেউ মেষের খোঁয়াড়ে দরজা দিয়ে না ঢুকে অন্য কোন রাস্তা দিয়ে ঢোকে, তবে সে চোর ও ডাকাত। ২ কিন্তু যে দরজা দিয়ে ঢোকে সে-ই মেষদের পালক। 3 4 ৩ পাহারাদার তার জন্য দরজা খুলে দেয়। মেষেরা তার কথা শোনে, এবং সে তার নিজের মেষদেরকে নাম ধরে ডাকে ও বাইরে নিয়ে যায়। ৪ সে নিজের সব মেষগুলিকে বের করার পরে, মেষগুলোর আগে আগে চলে এবং মেষেরা তার পিছনে পিছনে চলে কেননা মেষগুলো তার রাখালকে চেনে। 5 6 ৫ তারা কখনোই কোন অচেনা লোকের পিছনে যাবে না, বরং তাঁকে অবজ্ঞা করবে কারণ অচেনা লোকের গলার স্বরটি তাদের কাছে অপরিচিত “ ৬ হযরত ঈসা শিক্ষামুলক এই উদাহরনটি ফরীশীদের বললেন, কিন্তু তারা বুঝতে পারল না যে, তিনি তাদের কি বলেছেন। 7 8 ৭ এরপর ঈসা আবারো বললেন, ”সত্যিই, আমি তোমাদেরকে সত্যিই বলছি, যে, আমিই সেই মেষ খোঁয়াড়ের দরজা। ৮ আমার আগে যারা এসেছিল তারা সবাই ছিল চোর ও ডাকাত, তাই মেষেরা তাদের কথা শোনে নি। 9 10 ৯ আমিই সেই দরজা। যদি কেউ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে, তবে সে নিরাপদে থাকবে; সে ভিতরে ও বাইরে যাবে এবং চারণভূমি পাবে। ১০ চোর চুরি, হত্যা ও ধ্বংস করার প্রয়োজন ছাড়া আসেনা। আমি এসেছি যেন তারা জীবন পায় এবং তাদের জীবন যেন পরিপূর্ণ হয়। 11 12 13 ১১ আমিই উত্তম মেষপালক। উত্তম মেষপালক মেষদের জন্য নিজের জীবন দেয়। ১২ মেষগুলো যার নিজের নয় এমন একজন ভাড়া করা চাকর কখনো উত্তম মেষপালক হতে পারে না। সে নেকড়ে আসতে দেখলে মেষগুলি ফেলে পালায়, অতঃপর নেকড়ে মেষগুলিকে ধরে নিয়ে যায় ও ছিন্নভিন্ন করে। ১৩ সে পালায় কারণ সে একজন ভাড়া করা চাকর তাই মেষদের জন্য তেমন চিন্তা করে না। 14 15 16 ১৪ আমিই উত্তম মেষপালক, এবং যারা আমার নিজের তাদের আমি চিনি এবং তারাও আমাকে চেনে। ১৫ পিতা আমাকে চিনেন আর আমিও পিতাকে চিনি, এবং অমি আমার মেষদের জন্য নিজের জীবন কোরবানী করি। ১৬ আমার আরও মেষ আছে যেসব এই খোঁয়াড়ের নয়। আমি অবশ্যই তাদেরকেও নিয়ে আসব, এবং তারা আমার ডাক শুনবে যাতে একটি পাল এবং একটি রাখাল থাকবে। 18 17 ১৭ এই জন্য পিতা আমাকে মহব্বত করেন; কারণ আমি নিজেকে কোরবানী করবো যেন আবার তা ফিরে পাই। ১৮ কেউ আমার কাছ থেকে এটি কেড়ে নিবেনা, বরং আমি নিজে থেকেই এটি কোরবানী করবো। আমার কাছেে এটি কোরবানী করার ক্ষমতা আছে এবং আমার আবার এটি নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আমি আমার পিতার কাছ থেকে এই আদেশ পেয়েছি।” 19 20 21 ১৯ ঈসার এই সব কথা ইহূদীদের আবারো দ্বিধাদন্দে ফেলে দিলো। ২০ তাদের মধ্যে অনেকে বলল, ”একে ভূতে ধরেছে এবং সে পাগল। তোমরা কেন তার কথা শুনছ?” ২১ বাকি লোকেরা বলল, ” তার আচরণ ভূতগ্রস্ত লোকের মতো নয়। একজন ভূতগ্রস্থ লোক কি কারো দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিতে পারে?” 22 23 24 ২২ তখন জেরুজালেমে কোরবানীর ঈদের সময় ছিলো। শীতকাল, ২৩ আর ঈসা বায়তুল-মোকাদ্দসের সোলায়মানের বারান্দায় হাঁটছিলেন। ২৪ তখন ইহূদী নেতারা তাঁকে ঘিরে ধরে জানতে চাইলো, ”আর কতদিন আপনি আমাদেরকে সন্দেহের মধ্যে রাখবেন? আপনি যদি মসিহ্ হন,আমাদেরকে খোলাখুলি বলুন।” 25 26 ২৫ ঈসা তাদের বললেন, ”আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম কিন্তু তোমরা ঈমান আন নি। আমি যে সব কাজ আমার পিতার নামে করি, সেগুলোও আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়। ২৬ এখনো তোমরা ঈমান আন নি কারণ তোমরা আমার মেষ নও। 27 28 ২৭ আমার মেষরা আমার ডাক শোনে; আমি তাদের চিনি এবং তারাও আমার পিছন পিছন আসে। ২৮ আমি তাদেরকে অনন্ত জীবন দিই; তাদের কখনও মৃত্যু হবে না এবং কেউ আমার হাত থেকে তাদেরকে কেড়েও নিতে পারবে না। 29 30 31 ২৯ আমার পিতা, যিনি তাদের আমাকে দিয়েছেন, তিনি সবার চেয়ে মহান এবং কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারে না। ৩০ আমি ও পিতা এক।” ৩১ তখন ইহূদিরা আবার পাথর তুলল তাঁকে মারবার জন্য। 32 33 ৩২ ঈসা তাঁদের বললেন, "আমি পিতার হুকুমে তোমাদেরকে অনেক ভালো ভালো কাজ দেখিয়েছি। সেগুলোর মধ্যে কোন কাজের জন্য তোমরা আমাকে পাথর মারাতে চাইছ?” ৩৩ ইহূদিরা উত্তর দিল, ”কোনো ভালো কাজের জন্য আমরা তোমাকে পাথর মারছি না, কিন্তু তুমি কুফুরী করছো, কারণ তুমি, একজন মানুষ, নিজেকে মাবুদ বানাচ্ছো।” 34 35 36 ৩৪ ঈসা উত্তরে বললেন, ”তোমাদের শরীয়তে কি লেখা নেই, ’আমি বললাম, তোমরা আল্লাহর মতো?” ৩৫ যাদের কাছে আল্লাহর কালাম এসেছিল, তিনি তাদেরকে আল্লাহর মতো বলেছিলেন ( আর পাক-কিতাবের কথা বাদ দেওয়া যাবে না), ৩৬ যাকে পিতা মসিহ করলেন ও দুনিয়াতে পাঠালেন, তোমরা কি তাঁকেই বলছো যে, ’তুমি আল্লাহর বদনাম করছ,’ কারণ ’আমি বলেছি যে, আমি ইবনুল্লাহ’? 37 38 39 ৩৭ যদি আমি আমার পিতার কাজ না করি, তবে তোমরা আমার উপরে ঈমান এনো না। ৩৮ যদিও আমি এইগুলি করছি, তবুও যদি তোমরা আমার উপরে ঈমান আনতে না পারো, তবে সেই কাজগুলোর উপরে ঈমান আনো যেন তোমরা জানতে ও বুঝতে পার যে পিতা আমার মধ্যে আছেন এবং আমিও পিতার মধ্যে আছি।” ৩৯ তারা তাঁকে আবারো আটক করতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে বাইরে দূরে চলে গেলেন। 40 41 42 ৪০ তিনি আবারো দূরে জর্ডান নদীর ওপারে যেখানে ইয়াহিযা প্রথমে তরিকাবন্দী দিতেন সেখানে চলে গেলেন এবং সেখানেই থাকতে লাগলেন। ৪১ অনেক মানুষ তার কাছে আসলো, এবং তারা বলাবলি করতে লাগলো, ”হযরত ইয়াহিয়া কোন কেরামতি কাজ করেননি, কিন্তু এই মানুষটির সম্পর্কেে ইয়হিয়া যে সব কথা বলেছিলেন সে সবই সত্যি হয়েছে।” ৪২ অনেক মানুষ সেখানে তার উম্মতি গ্রহন করলো।

Chapter 11

1 2 ১ লাসার নামে একজন লোক খুবই অসুস্থ ছিলেন, তিনি বৈথনিয়া গ্রামের দুই বোন মরিয়ম ও মার্থার ভাই ছিলেন। ২ ইনি সেই মরিয়ম যিনি হযরতের পায়ে আতর মাখিয়ে দেন এবং নিজের মাথার চুল দিয়ে হযরতের পা মুছে দেন, তাঁরই ভাই লাসার অসুস্থ ছিলেন। 3 4 ৩ বোনেরা ঈসাকে বলে পাঠালেন, ”হযরত, দেখুন, আপনি যাকে মহব্বত করেন সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।” ৪ ঈসা এই কথা শুনলেন, তিনি বললেন, ”এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয়নি, কিন্তু মাবুদের মহিমার জন্য হয়েছে যেন ইবনুল্লাহ এর দ্বারা মহিমান্বিত হন।” 5 6 7 ৫ মার্থা ও তাঁর বোন এবং লাসারকে ঈসা মহব্বত করতেন। ৬ তাই লাসারের অসুস্থতার খবর শোনার পর, তিনি যে জায়গায় সফরে ছিলেন সেখানে আরও দুই দিন থাকলেন। ৭ এরপর তিনি সাহাবীদের বললেন, "চল আমরা আবার এহূদিয়াতে যাই।” 8 9 ৮ সাহাবীরা তাঁকে বললেন, ”হুজুর, এই সেদিনই তো ইহূদিরা আপনাকে পাথর মারতে চেয়েছিল, আর আপনি আবারো সেখানে যাবেন?” ৯ ঈসা জবাব দিলেন, ”একদিনে কি বারো ঘন্টা আলো থাকে না?” যদি কেউ দিনের বেলা হাঁটে, সে হোঁচট খাবে না, কারণ সে দিনের অলোতে সব দেখে। 10 11 ১০ তবে, যদি সে রাতে হাঁটে, সে হোঁচট খাবে কারণ তখন আলো থাকে না।” ১১ তিনি এই সব কথা বললেন, এবং এই সব কিছু বলার পরে, তিনি তাঁদেরকে বললেন, ”আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে, কিন্তু আমি যাচ্ছি যেন তাকে ঘুম থেকে জাগাতে পারি।” 12 13 14 ১২ তখন সাহাবীরা তাঁকে বললেন, ”হযরত, সে যদি ঘুমিয়েই থাকে, তবে সে সুস্থ হয়ে উঠবে।” ১৩ এখানে ঈসা তাঁর মৃত্যুর কথা বলেছিলেন, কিন্তু তাঁরা মনে করেছিলেন যে, তিনি স্বাভাবিক ঘুমের কথাই বলেছেন। ১৪ এরপরে ঈসা স্পষ্টভাবে তাঁদেরকে বললেন, ”লাসার মারা গেছে।” 15 16 ১৫ আমি আনন্দিত, তোমাদের জন্য, আমি সেখানে ছিলাম না যাতে তোমরা বিশ্বাস কর। এখন চল আমরা তার কাছে যাই। ১৬ থোমা, যাকে যমজ বলা হতো, তার সঙ্গী সাহাবীদের বললেন, ”চল আমরাও যাই যেন ঈসার সঙ্গে মরতে পারি।” 17 18 19 20 ১৭ ঈসা যখন আসলেন, তিনি শুনলেন যে, লাসারকে চার দিন আগে দাফন করা হয়েছে। ১৮ বৈথনিয়া জেরুজালেমের কাছেই ছিল, দুরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। ১৯ ইহূদিদের মধ্য থেকে অনেকেই মার্থা ও মরিয়মের কাছে এসেছিল, তাঁদের ভাইয়ের জন্য সান্ত্বনা দিতে। ২০ তখন মার্থা, যখন সে শুনল যে ঈসা আসিতেছেন, তাঁর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু মরিয়ম ঘরেই বসে ছিলেন। 21 22 23 ২১ মার্থা তখন ঈসাকে বললেন, ”প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই হয়ত মরত না। ২২ তবে এখনও, আমি জানি যে, আপনি আল্লাহর কাছে যা কিছু চাইবেন, আল্লাহ তা আপনাকে দেবেন।” ২৩ ঈসা তাঁকে বললেন, ”তোমার ভাই আবার উঠবে।” 24 25 26 ২৪ মার্থা তাঁকে বললেন, ”আমি জানি যে শেষের দিনে পুনরুত্থানে সে আবার উঠবে।” ২৫ ঈসা তাঁকে বললেন, ”আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে আমার উপরে ঈমান আনে, যদি সে মরেও, জীবন পাবে; ২৬ এবং যে বেঁচে আছে এবং আমার উপরে ঈমান আনে সে কখনও মরবে না। তোমার কি এই কথার উপর ঈমান আছে?” 27 28 29 ২৭ তিনি তাঁকে বললেন, ”হ্যাঁ, হযরত, আমি ঈমান এনেছি যে আপনিই সেই মসিহ, ইবনুল্লাহ, যিনি এই দুনিয়ায় এসেছেন।” ২৮ যখন তিনি কথাগুলো বললেন, তিনি চলে গেলেন এবং তার নিজের বোন মরিয়মকে গোপনে ডাকলেন। তিনি বললেন, ”হুজুর এখানে এসেছেন এবং তোমাকে ডাকছেন।” ২৯ যখন তিনি এটি শুনলেন, তিনি তাড়াতাড়ি উঠে তার কাছে গেলেন। 30 31 32 ৩০ ঈসা তখনও গ্রামে প্রবেশ করেননি কিন্তু যেখানে মার্থা তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেই জায়গাতেই ছিলেন। ৩১ তখন যে ইহূদিরা, তার সঙ্গে ঘরের মধ্যে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা দেখলো মরিয়ম তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে চলে গেলেন, তারাও তাঁর পিছু নিল, তারা মনে করলো তিনি কবরের কাছে কাঁদতে যাচ্ছেন। ৩২ যখন মরিয়ম যেখানে ঈসা ছিলেন সেখানে আসলেন, তখন তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়ে বললেন, ”হযরত, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না।” 33 34 35 ৩৩ ঈসা যখন দেখলেন তিনি কাঁদছেন, ও তাঁর সঙ্গে যে ইহূদিরা এসেছিল তারাও কাঁদছে, তখন আত্মায় খুব অস্থির হয়ে উঠলেন ও উদ্বিগ্ন হলেন; ৩৪ তিনি বললেন "তোমরা তাকে কোথায় দাফন করেছো ?" তাঁরা তাঁকে বললেন, ”হযরত, এসে দেখুন।” ৩৫ ঈসা কাঁদলেন। 36 37 ৩৬ তখন ইহূদিরা বলল, ”দেখ তিনি লাসারকে কতটা মহব্বত করতেন !” ৩৭ কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ”এই মানুষটি কি পারতেন না, যে ব্যাক্তি অন্ধের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন, একই ভাবে মানুষটিকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে?” 38 39 40 ৩৮ এতে ঈসা আবারো, মনে মনে অস্থির হয়ে, কবরের কাছে গেলেন। সেই কবর একটা গুহা ছিল, এবং তার উপরে একটা পাথর দেওয়া ছিল। ৩৯ ঈসা বললেন, "তোমরা পাথরটা সরিয়ে ফেল।” মার্থা, মৃত লাসারের বোন, ঈসাকে বললেন, ”হযরত, এতক্ষণে ওর দেহ পঁচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে, কারণ সে মারা গেছে চার দিন হয়েছে।” ৪০ ঈসা তাঁকে বললেন, "আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যদি তুমি ঈমান আনো, তবে মাবুদের কুদরত দেখতে পাবে?" 41 42 ৪১ তাই তারা পাথরটি সরিয়ে ফেললো। ঈসা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, ”পিতা, আমি তোমার শুকরিয়া আদায় করি যে, তুমি আমার কথা শুনেছ। ৪২ আমি জানতাম তুমি সবসময় আমার কথা শোন, কিন্তু এই যে সব মানুষের দল আমার চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এদের জন্য এই কথা বললাম, যেন তারা বিশ্বাস করে যে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ।” 43 44 ৪৩এই সব বলার পরে, তিনি চিৎকার করে ডেকে বললেন, ”লাসার, বাইরে এস।” ৪৪ তাতে সেই মৃত মানুষটি বেরিয়ে আসলেন; তাঁর পা ও হাত কবর কাপড়ে জড়ানো ছিল, এবং তার মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ঈসা তাদেরকে বললেন, "তাকে খুলে দাও এবং যেতে দাও।" 45 46 ৪৫ তখন ইহূদিদের অনেকে যারা মরিয়মের কাছে এসেছিল এবং দেখেছিল ঈসা যা করেছিলেন, তাঁতে উপস্থিত সবাই ঈমান আনলো। ৪৬ কিন্তু তাদের কয়েকজন ফরীশীদের কাছে ছুটে গেল এবং ঈসা যা কিছু করেছিলেন তাদেরকে তার সবই বলল। 47 48 ৪৭ তখন প্রধান ইমামগণ ও ফরীশীরা মহাসভা করে বলতে লাগল, ”আমরা এখন কি করব?” এ মানুষটি তো অনেক অলৌকিক কাজ করছে। ৪৮ আমরা যদি তাঁকে এইভাবে চলতে দিই, তবে সবাই তার উপরেই ঈমান আনবে; তখন রোমীয়েরা আসবে এবং আমাদের দেশ ও জাতি উভয়ই কেড়ে নেবে।” 49 50 ৪৯ যাহোক, তাদের মধ্যে একজন ক্ষমতাশালী ব্যাক্তি, কাইয়াফা, যিনি সেই বছরের মহা-ইমাম ছিলেন, তাদেরকে বললেন, ”তোমরা কিছুই জানো না। ৫০ আর ভেবেও দেখ না যে সমগ্র জাতি ধ্বংস হওয়ার চেয়ে মানুষের জন্য একজন মানুষের মৃত্যু তোমাদের জন্য ভালো।” 51 52 53 ৫১ এই সব কথা তিনি নিজের থেকে বললেন নি, বরং, তিনি ছিলেন সেই বৎসরের মহা-ইমাম, তিনি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন যে, ঈসা জাতির জন্য মৃত্যুবরন করবেন। ৫২ আর শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয় বরং যাতে আল্লাহর সন্তানরা যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তারা একত্রিত হয়।। ৫৩ তাই সেই দিন থেকে তারা ঈসাকে কীভাবে হত্যা করা যায় তার পরিকল্পনা করেছিল। 54 55 ৫৪ তখন থেকে ঈসা আর খোলাখুলি ভাবে ইহূদিদের মধ্যে চলাফেরা করতেন না, আর সেখান থেকে দূরে মরূপ্রান্তের কাছে এক নিরাপদ জায়গা আফরাহীম নামক শহরে গেলেন। সেখানে তিনি তার সাহাবীদের নিয়ে থাকতেন। ৫৫ তখন ইহূদিদের উদ্ধার-ঈদ কাছে এসেছিল, এবং অসংখ্য মানুষ নিজেদেরকে পাক-সাফ করবার জন্য উদ্ধার-ঈদের আগে দেশের সমস্ত এলাকা থেকে জেরুজালেমে গিয়েছিল। 56 57 ৫৬ তারা ঈসার খোঁজ করছিলেন, এবং বায়তুল-মোকাদ্দসে দাঁড়িয়ে একে অপরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো, ”তোমরা কি ধারণা কর? তিনি কি এই ঈদে আসবেন না?” ৫৭ আর তখন প্রধান ইমাম ও ফরীশীরা হুকুম দিয়েছিল যে, যদি কেউ জানে ঈসা কোথায় আছেন, সে যেন খবর দেয় যেন তারা তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে।

Chapter 12

1 2 3 ১ উদ্ধার-ঈদ শুরুর ছয় দিন আগে ঈসা বৈথনিয়াতে এলেন, যেখানে লাসার ছিলেন, যাকে ঈসা মৃত থেকে জীবিত করেছিলেন। ২ তাই তারা তাঁর জন্য সেখানে একটা ভোজের আয়োজন করেছিল, এবং মার্থা পরিবেশন করছিলেন, তাদের মধ্যে লাসার ছিল একজন যে টেবিলে ঈসার সঙ্গে বসেছিল। ৩ তারপর মরিয়ম এক লিটার খুব দামী সুগন্ধি লতা দিয়ে তৈরী খাঁটি আতর, এনে ঈসার পায়ে মাখিয়ে দিলেন, এবং নিজের চুল দিয়ে তাঁর পা মুছে দিলেন। বাড়িটি আতরের সুগন্ধে ভরে গিয়েছিল। 4 5 6 ৪ যিহূদা ঈষ্করিয়োত, ঈসার একজন সাহাবী, যে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, সে বলল, ৫ "কেন এই আতর তিনশো দিনারে বিক্রি করে গরিবদের দিলে না?" ৬ সে এটি বলেছিল, গরিব লোকদের জন্য চিন্তা করে নয়, বরং সে ছিল একজন চোর। টাকার থলি তার কাছে থাকত এবং কিছু রাখলে সে সেখান থেকে চুরি করতো। 7 8 ৭ ঈসা বললেন, " তাকে আমার দাফনের দিনের জন্য যা আছে তা রাখতে দাও। ৮ গরিবদের তোমরা সবসময় তোমাদের কাছে পাবে। কিন্তু তোমরা আমাকে সবসময় পাবে না।" 9 10 11 ৯ ইহূদিদের একদল লোক জানতে পেরেছিল যে, ঈসা সেখানে ছিলেন, তারা এসেছিল, তারা শুধুমাত্র ঈসাকে দেখতে আসেনি, তারা লাসার কেও দেখতে এসেছিল, ঈসা যাকে মৃত্যর পর জীবিত করেছিলেন। ১০ প্রধান ইমামেরা ষড়যন্ত্র করল যে লাসারকে ও মেরে ফেলতে হবে; ১১ কারণ তাঁর কারণেই অনেক ইহূদি চলে গিয়েছিল এবং ঈসার উপর ঈমান এনেছিল। 12 13 ১২ পরের দিন অনেক লোক ঈদ উত্সবে এসেছিল। যখন তারা শুনতে পেল যে ঈসা জেরুজালেমে আসছেন, ১৩ তারা খেঁজুর পাতা হাতে নিয়েছিল এবং তাঁকে স্বাগত জানাতে গিয়েছিল অতঃপর চিৎকার করে বলছিল, "মারহাবা! ধন্য তিনি যিনি মাবুদের নামে আসছেন, তিনিই ইস্রায়েলের বাদশাহ্।" 14 15 ১৪ ঈসা একটা গাধাশাবক দেখতে পেলেন এবং তার ওপর বসলেন; কিতাবে যেমন লেখা ছিল, ১৫ “ভয় কোরো না, সিয়োন কন্যা; দেখ, তোমার বাদশা আসছেন, একটা গাধাশাবকের উপরে বসে আসছেন।” 16 1১৬ তাঁর সাহাবীরা প্রথমে এই সব বিষয় বুঝতে পারেনি; কিন্তু ঈসা যখন মহিমান্বিত হলেন, তখন তাঁদের মনে পড়ল যে, তাঁর বিষয়ে এই সব কেতাবেই লেখা ছিল এবং লোকেরা তাঁর জন্যই ঐ সব করেছিলো। 17 18 19 ১৭ তখন লোকজন সাক্ষ্য দিতে লাগলো যে তাঁরা তখন ঈসার সঙ্গে ছিলেন যখন তিনি মৃত লাসার কে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন আর তাকে মৃত থেকে জীবিত করেছিলেন। ১৮ এটার আরও কারণ ছিল যে লোকেরা তাঁকে স্বাগত জানাতে গিয়েছিল কারণ তারা তাঁর এই অলৌকিক কাজের কথা শুনেছিল। ১৯ এদেখে ফরীশীরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলো, "দেখ, কোন লাভই হচ্ছে না; তাকিয়ে দেখ, সারা দুনিয়া তার দলে চলে গেছে।” 20 21 22 ২০ ঐ ঈদে যারাে এবাদত করতে এসেছিল তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রীকও ছিল। ২১ তারা ফিলিপের কাছে গিয়েছিল, যিনি ছিলেন গালীলের বৈৎসৈদা এলাকার বাসিন্দা, এবং তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, বলেছিল, "জনাব, আমরা ঈসাকে দেখতে চাই।” ২২ ফিলিপ গিয়ে আন্দ্রিয়কে বলেছিলেন; আন্দ্রিয় ফিলিপের সঙ্গে গিয়েছিলেন, অতঃপর তাঁরা দুজনে ঈসাকে জানিয়েছিলেন। 23 24 ২৩ ঈসা উত্তরে তাদের বললেন, ”ইবনে-আদমকে মহিমান্বিত করার সময় এসেছে। ২৪ সত্য, সত্যই, আমি তোমাদের বলছি, গমের বীজ মাটিতে পড়ে যদি না মরে, তবে এটা একটা মাত্র থাকে, কিন্তু যদি এটা মরে তবে এটা অনেক ফল দেবে। 25 26 ২৫ যে তার নিজের জীবনকে ভালবাসে সে তার সত্যিকারের জীবন হারাবে; কিন্তু যে কেউ এই জগতে তার জীবনকে ঘৃণা করে সে অনন্তকালের জন্য প্রাণ রক্ষা করবে। ২৬ কেউ যদি আমার সেবা করে, তবে সে আমাকে অনুসরণ করুক; এবং আমি যেখানে থাকব আমার সেবকও সেখানে থাকবে। কেউ যদি আমার সেবা করে, তবে পিতা তাকে সম্মান করবেন। 27 28 29 ২৭ এখন আমার আত্মা উদ্বিগ্ন এবং আমি কি বলব? ’পিতা, আমাকে এই মুহুর্ত থেকে বাঁচাবেন?’ কিন্তু এই কারণে আমি এই সময়ে এসেছি। ২৮ পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত হোক।” বেহেশত থেকে তখন এই কথা শোনা গেল, ”আমি তা মহিমান্বিত করেছি এবং আবারে একে মহিমান্বিত করব।” ২৯ তখন যে লোকেরা পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং শুনেছিল তারা বলল যে এটি বজ্রপাত হয়েছে। অন্যরা বলল, "একজন ফেরেশতা তার সাথে কথা বলেছেন।" 30 31 ৩০ ঈসা উত্তরে বললেন, "এই কথা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়নি, বরং তোমাদের উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে। ৩১ এখন এই জগতের বিচার : এখন এই জগতের শাসককে বহিষ্কার করা হবে। 32 33 ৩২ আমি যখন পৃথিবী থেকে উপরে উঠব, আমি সবাইকে নিজের কাছে টানব।" ৩৩ তিনি কি ধরনের মৃত্যু হবে তা নির্দেশ করার জন্য এটি বলেছিলেন। 34 35 36 ৩৪ তখন লোকেরা উত্তর দিল, "আমরা পাক-কিতাব থেকে শুনেছি যে, মসীহ চিরকাল থাকবেন। আপনি কিভাবে বলছেন যে, ’ইবনে-আদমকে অবশ্যইে উপরে তোলা হবে?’ তবে এই ইবনে-আদম কে?" ৩৫ ঈসা তখন তাদের বললেন, "আর অল্প সময়ের জন্য নূর তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছে। যতক্ষণ তোমাদের সঙ্গে নূর আছে তোমরা চলতে থাক, তাহলে অন্ধকার তোমাদেরকে গ্রাস করবে না। যে অন্ধকারে চলে সে জানে না সে কোথায় যাচ্ছে। ৩৬ যতক্ষণ তোমাদের কাছে নূর আছো, সেই নূরে ঈমান আনো যেন তোমরা নূরের উম্মত হতে পার।" ঈসা এই সব কথা বললেন এবং তারপর চলে গেলেন অতঃপর তাদের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখলেন। 37 38 ৩৭ যদিও ঈসা তাদের সামনে অনেক অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তা সত্ত্বেও তারা তাঁর উপরে ঈমান আনে নি। ৩৮ এটি এজন্য যাতে ইশাইয়া নবীর বলা কথা সম্পূর্ণ হয়, তিনি বলেছিলেন: “ মাবুদ, কে আমাদের তাবলীগে ঈমান এনেছে? এবং কার কাছেই বা মাবুদের শক্তিশালী হাত প্রকাশিত হয়েছে?” 39 40 ৩৯ এই জন্য তারা ঈমান আনে নি, কারণ ইশাইয়া এটাও বলেছিলেন, ৪০ “তিনি তাদের চোখ অন্ধ করেছেন এবং তিনি তাদের হৃদয় কঠিন করেছেন; না হলে তারা তাদের চোখ দিয়ে দেখত এবং হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করত, ও ফিরে আসতো এবং আমি তাদের সুস্থ করতাম।” 41 42 43 ৪১ ইশাইয়া এই সব বিষয় বলেছিলেন কারণ তিনি ঈসার মহিমা দেখেছিলেন এবং তাঁরই বিষয় বলেছিলেন। ৪২ কিন্তু তা সত্বেও, অনেক শাসকেরা ঈসার উপরে ঈমান এনেছিল; কিন্তু ফরীশীদের কারণে, তারা এটা স্বীকার করে নি যাতে তারা সেনাগগ থেকে নিষিদ্ধ না হয়। ৪৩ তারা আল্লাহর কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে বেশি ভালবাসত। 44 45 ৪৪ ঈসা চিৎকার করে বললেন, "যে আমার উপরে ঈমান আনে, সে কেবল আমার উপরে ঈমান আনে তা নয় বরং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর উপরেও ঈমান আনে, ৪৫ আর যে আমাকে দেখে সে তাঁকেও দেখে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 46 47 ৪৬ আমি এই দুনিয়াতে নূর হিসাবে এসেছি, সুতরাং যে আমার উপরে ঈমান আনে সে অন্ধকারময় জীবনে থাকে না। ৪৭ যদি কেউ আমার কথা শুনে কিন্তু মান্য করে না, আমি তার বিচার করি না; কারণ আমি দুনিয়ার বিচার করতে আসিনি, কিন্তু দুনিয়াকে নাজাত করতে এসেছি। 48 49 50 ৪৮ যে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং আমার বাক্য গ্রহন করে না, তাঁর বিচার করার একজন আছেন। আমি যে কথা বলেছি তা শেষ দিনে তার বিচার করবে। ৪৯ কারণ আমি আমার নিজের থেকে কিছু বলিনি, কিন্তু, পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমাকে কি কি বলতে হবে সেই বিষয়ে হুকুম দিয়েছেন। ৫০ আমি জানি যে তাঁর হুকুমই অনন্ত জীবন; তাই আমি যা বলি- পিতা যেমন আমাকে বলেছেন, আমিও তাই বলি।"

Chapter 13

1 2 ১ উদ্ধার-ঈদের আগের ঘটনা, ঈসা জানতে পেরেছিলেন যে এই পৃথিবী ছেড়ে পিতার কাছে যাবার সময় তাঁর হয়েছে। তাই এই দুনিয়াতে যারা তাঁর নিজের মহব্বতের পাত্র ছিল, তিনি তাদেরকে শেষ পর্যন্তই মহব্বত করেছিলেন। ২ তাই রাতের খাবারের সময়, শয়তান আগে থেকেই শিমোনের ছেলে ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদার মনে, ঈসার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা জাগিয়ে দিয়েছিল। 3 4 5 ৩ ঈসা- যিনি জানতেন যে পিতা সব কিছুই তাঁর হাতে দিয়েছিলেন এবং তিনি আল্লাহর কাছ থেকে এসেছিলেন এবং আল্লাহর কাছেই ফিরে যাচ্ছিলেন- ৪ তিনি রাতের খাবার থেকে উঠলেন এবং উপরের কাপড়টি খুলে রাখলেন। তারপর তিনি একটি তোয়ালে নিলেন এবং নিজের কোমরে জড়ালেন। ৫ তারপরে তিনি একটি গামলায় পানি ঢাললেন এবং সাহাবীদের পা ধোয়াতে শুরু করলেন এবং তার চারপাশে জড়ানো তোয়ালে দিয়ে শুকাতে লাগলেন। 6 7 8 9 ৬ তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলেন এবং পিতর তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, "হুজুর, আপনি কি আমার পা ধুইয়ে দেবেন?" ৭ ঈসা উত্তরে বললেন, "আমি কি করছি তা তুমি এখন বুঝতে পারছ না, কিন্তু পরে এটা বুঝতে পারবে।" ৮ পিতর তাঁকে বললেন, "আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না।" ঈসা উত্তরে তাঁকে বললেন, ”যদি আমি তোমার পা ধুয়ে না দিই, তবে তুমি আমার অংশীদার নও।” ৯ শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, "হুজুর, কেবল আমার পা ধোবেন না, কিন্তু আমার হাত ও মাথাও ধুইয়ে দিন।" 10 11 ১০ ঈসা তাঁকে বললেন, ”যে গোসল করেছে, তার পা ছাড়া আর কিছু ধোয়ার দরকার নেই, এবং সে পুরোপুরিই পরিষ্কার; তোমরা অবশ্য পরিষ্কার, কিন্তু সকলে নও।" ১১ (কারণ ঈসা জানতেন কে তাঁর সঙ্গে বেঈমানী করবে; এই জন্য তিনি বলেছিলেন, "তোমাদের মধ্যে সবাই পরিষ্কার নও।") 12 13 14 15 ১২ যখন ঈসা তাদের পা ধোয়া শেষ করলেন অতঃপর তাঁর পোষাক পরলেন, এবং আবার বসলেন, তাদের বললেন, "তোমরা কি বুঝতে পেরেছো আমি তোমাদের জন্য কি করেছি? ১৩ তোমরা আমাকে 'ওস্তাদ' এবং 'হুজুর' বলে ডাক, এবং তোমরা ঠিকই বল, কারণ আমিই সেই। ১৪ তাহলে যদি আমি, প্রভু এবং হুজুর, তোমাদের পা ধুইয়ে থাকি, তবে তোমরাও একে অন্যের পা ধুইবে। ১৫ সেইজন্য আমি তোমাদের একটা উদাহরন দিয়েছি সুতরাং তোমাদেরও এই রকম করা উচিত যা আমি তোমাদের জন্য করেছি। 16 17 18 ১৬ সত্যি, সত্যিই, আমি তোমাদের বলছি, একজন গোলাম তার নিজের মনিব থেকে বড় নয়; একজন বার্তাবাহক কখনোই বড় নয় তাঁর প্রেরকের চেয়ে। ১৭ যদি তোমরা এই বিষয়গুলো জানো, তাহলে তোমরা রহমত পাবে যদি তাদের জন্যও এগুলো কর।১৮ আমি তোমাদের সকলের বিষয়ে বলছি না; আমি তাদের জানি যাদের আমি বেছে নিয়েছি- কিন্তু এটি এজন্য যে পাক-কিতাবের কথা পূর্ণ হবেই: 'যে আমার রুটি খায় সে আমার বিরুদ্ধে তার গোঁড়ালি তুলেছে।' 19 20 ১৯ এটা ঘটবার আগেই আমি তোমাদের বলছি যে যখন এটা ঘটবে, তখন তোমরা যেন বিশ্বাস করতে পারো আমিই সেই। ২০ সত্যি, সত্যিই, আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ আমার প্রেরিত কে গ্রহণ করে সে আমাকেই গ্রহন করে, এবং যে অমাকে গ্রহন করে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সে তাঁকেই গ্রহণ করে।" 21 22 ২১ যখন ঈসা এই কথা বললেন, তখন তিনি মনে কষ্ট পেলেন।তিনি সাক্ষ্য দিলেন এবং বললেন, "সত্যি, সত্যিই, আমি তোমাদের বলছি যে তোমাদের মধ্যেই একজন আমার সঙ্গে বেঈমানী করবে।" ২২ সাহাবীরা একে অপরের দিকে তাকালো, তিনি কার বিষয়ে কথা বলছেন তা নিয়ে অবাক হয়েছিলো। 23 24 25 ২৩ তাঁর সাহাবীদের মধ্যে একজন, যাকে ঈসা মহব্বত করতেন, ঈসার পাশে টেবিলে শুয়ে ছিল। ২৪ শিমোন পিতর সেই সাহাবীকে ইশারা করলেন এবং বললেন, "তাঁকে জিজ্ঞাসা করো সে কে তিনি যার কথা বলছেন।" ২৫ তাই সে ঈসার পাশে হেলান দিয়ে বললেন, "হুজুর, কে?" 26 27 ২৬ ঈসা তার উত্তরে বললেন, "এটি সেই ব্যাক্তি যার জন্য আমি রুটি র টুকরোটা ডোবাব এবং তাকে দেব।” তাই যখন তিনি রুটির টুকরো ডোবালেন, ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের ছেলে যিহূদাকে তা দিলেন। ২৭ তখন রুটি টি দেবার পরেই, শয়তান তার অন্তরে প্রবেশ করল, তারপরে ঈসা তাকে বললেন, "তুমি যেটা করছ, সেটা তাড়াতাড়ি কর।" 28 29 30 ২৮ তখন ভোজের টেবিলের কেউ জানতে পারেনি যে ঈসা তাকে কেন এটা বলেছিলেন। ২৯ কিছু লোক চিন্তা করেছিল যে, যিহূদার কাছে টাকার থলি ছিল, ঈসা তাকে বললেন, "উৎসবের জন্য যে জিনিসগুলো দরকার কিনে আন," অথবা সে যেন অবশ্যই গরিবদের কিছু জিনিস দেয়। ৩০ যিহূদা রুটি টি গ্রহণ করার পর, সে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল। তখন ছিল রাত। 31 32 33 ৩১ যখন যিহূদা চলে গেল, ঈসা বললেন, "এখন ইবনে- আদম মহিমান্বিত হলেন, এবং আল্লাহ নিজে মহিমান্বিত হলেন। ৩২ যদি আল্লাহ নিজে মহিমান্বিত হন, তবে আল্লাহ পুত্র কেও তাঁর জন্য মহিমান্বিত করবেন, আর তিনি খুব তাড়াতাড়িই তাঁকে মহিমান্বিত করবেন। ৩৩ প্রিয় শিশুরা, আমি অল্পদিনের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি। তোমরা আমাকে খুঁজবে, এবং আমি ইহূদিদের যেমন বলেছিলাম, ‘আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না।’ এখন আমি তোমাদেরও তাই বলছি। 34 35 ৩৪ আমি তোমাদের এক নতুন হুকুম দিচ্ছি, যে তোমরা একে অন্যকে মহব্বত করবে; ঠিক আমি যেমন তোমাদের মহব্বত করেছি, তাই তোমরাও একে অন্যকে মহব্বত করবে। ৩৫ এর মাধ্যমে প্রত্যেকে জানবে যে তোমরা আমার শিষ্য, যদি তোমরা একে অপরকে মহব্বত করো।” 36 37 38 ৩৬ শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, "হুজুর, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?" ঈসা উত্তর দিলেন, "আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা এখন আসতে পারবে না, কিন্তু পরে তোমরা আসতে পারবে।" ৩৭ পিতর তাঁকে বললেন, "হুজুর, কেন এখন আপনার সঙ্গে যেতে পারবো না? আপনার জন্য আমি আমার জীবনও দেব।" ৩৮ ঈসা উত্তরে বললেন, ”তুমি কি আমার জন্য তোমার জীবন দেবে? সত্যি, সত্যিই, আমি তোমাকে বলছি, তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করার আগে মোরগ ডাকবে না।"

Chapter 14

1 2 3 ১ "তোমাদের মন যেন অস্থির না হয়। তোমরা আল্লাহর উপরে ঈমান আনো; আমার উপরেও ঈমান আনো। ২ আমার পিতার বাড়িতে থাকার অনেক জায়গা আছে। যদি তা না থাকতো, আমি তোমাদের বলতাম, সেইজন্য আমি তোমাদের জন্য থাকার জায়গা তৈরী করতে যাচ্ছি। ৩ যদি আমি যাই এবং তোমাদের জন্য থাকার জায়গা তৈরী করি, আমি আবার আসব এবং আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব, যেন আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার। 4 5 6 7 ৪ আমি কোথায় যাচ্ছি সে পথ তোমরা জান।"। ৫ থোমা ঈসাকে বললেন, "হুজুর, আমরা জানি না আপনি কোথায় যাচ্ছেন; আমরা কিভাবে পথটা জানব?" ৬ ঈসা তাঁকে বললেন, "আমিই পথ, সত্য ও জীবন; আমার মাধ্যম ছাড়া কেউ পিতার কাছে যেতে পারে না। ৭ যদি তোমরা আমাকে চিনতে, তবে আমার পিতাকেও চিনতে। এখন থেকে তোমরা তাঁকে চিন এবং দেখেছ।" 8 9 ৮ ফিলিপ ঈসাকে বললেন, "হুজুর, আমাদের পিতাকে দেখান, এবং আমাদের জন্য এটাই যথেষ্ট হবে।" ৯ ঈসা তাঁকে বললেন, "আমি এত দিন তোমার সঙ্গে আছি এবং তুমি এখনো আমাকে চিনতে পারো না, ফিলিপ?" যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে, তুমি কিভাবে বলতে পারো, 'আমাদের পিতাকে দেখান'? 10 11 ১০ তুমি কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যেই আছেন? যে সব কথা আমি তোমাদের বলছি সে সব আমার নিজের কথা নয়, কিন্তু পিতা আমার মধ্যে থেকে নিজের কাজ করছেন। ১১ আমাকে বিশ্বাস কর যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যে আছেন, অন্যথায় কাজের কারণে বিশ্বাস কর। 12 13 14 ১২ সত্যি, সত্যিই, আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ আমার উপরে ঈমান আনে তবে আমি যে সব কাজ করি সেও তাই করবে, এবং সে এর থেকেও মহান কাজগুলো করবে কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি। ১৩ তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা করব যেন পিতা তাঁর পুত্রের মাধ্যমে মহিমান্বিত হন। ১৪ যদি তোমরা আমার নামে কিছু চাও, তা আমি করব। 15 16 17 ১৫ যদি তোমরা আমাকে মহব্বত করো, তবে তোমরা আমার সব হুকুম পালন করবে, ১৬ এবং আমি পিতার কাছে দোয়া করব, এবং তিনি তোমাদের অন্য একজন সহায়ক দেবেন সুতরাং তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকবেন- ১৭ তিনি সত্যের রুহ। দুনিয়ার লোকেরা তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না কারণ সে তাঁকে দেখতে পারেনা অথবা তাঁকে চিনেও না। কিন্তু তোমরা তাঁকে জান, এইজন্য তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকেন এবং তোমাদের কলবে থাকবেন। 18 19 20 ১৮ আমি তোমাদের এতিমদের মতো রেখে যাব না; আমি তোমাদের কাছে ফিরে আসব। ১৯ তবুও অল্প সময় এবং লোকেরা আর আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমাকে দেখতে পাবে। কারণ আমি বেঁচে আছি, তোমরাও বেঁচে থাকবে। ২০ সেই দিন তোমরা জানবে যে আমি আমার পিতার মধ্যে আছি, আর তোমরা আমার মধ্যে আছ এবং আমি তোমাদের মধ্যে আছি। 21 22 ২১ যে আমার আদেশ জানে এবং সেগুলি পালন করে সে আমাকে মহব্বত করে, এবং যে আমাকে মহব্বত করে আমার পিতাও তাকে মহব্বত করবেন, এবং আমি তাকে মহব্বত করবো এবং আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব।” ২২ এহূদা (ঈষ্করিয়োতীয় নয়) ঈসাকে বললেন, "হুজুর, কি ঘটেছে যে আপনি আমাদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করবেন জগতের কাছে নয়?" 23 24 ২৩ ঈসা উত্তর দিলেন এবং তাঁকে বললেন, "যদি কেউ আমাকে মহব্বত করে, তাহলে সে আমার কথা মান্য করবে। আমার পিতা তাকে মহব্বত করবেন, এবং আমরা তাঁর কাছে আসব এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের বাস করার জায়গা তৈরী করবো। ২৪ যে আমাকে মহব্বত করে না সে আমার কথা মান্য করে না। যে কথা তোমরা শুনছ সেটা আমার কথা নয় কিন্তু পিতার কথা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 25 26 27 ২৫ আমি তোমাদের এই সব বিষয় বলেছি, যখন আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি। ২৬ যাইহোক, সান্তনাদাতা- পবিত্র আত্মা যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠাবেন- তিনি তোমাদের সব কিছু শেখাবেন এবং আমি তোমাদের যা বলেছি সে সবই তিনি তোমাদের মনে করিয়ে দেবেন। ২৭ আমি তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি; আমার শান্তি তোমাদের দান করছি। জগত যেভাবে দেয় আমি সেভাবে দিই না। তোমাদের মন যেন অস্থির না হয় এবং মনে ভয়ও না থাকে। 28 29 ২৮ তোমরা শুনেছ যে আমি তোমাদের বলেছি, 'আমি চলে যাচ্ছি এবং আবার তোমাদের কাছে ফিরে আসব।' 'যদি তোমরা আমাকে মহব্বত করতে, তবে তোমরা আনন্দ করতে কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, কারণ পিতা আমার চেয়েও মহান। ২৯ এখন ঐসব ঘটবার আগে আমি তোমাদের বলেছি যাতে, যখন এটা ঘটবে, তখন তোমরা ঈমান আনবে। 30 31 ৩০ আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশি কথা বলবো না, কারণ দুনিয়ার শাষণকর্তা আসছে। আমার উপরে তার কোন ক্ষমতা নেই, ৩১ কিন্তু যাতে দুনিয়া জানতে পারে যে আমি পিতাকে ভালোবাসি, পিতা আমাকে যেমন আদেশ করেন আমি ঠিক তেমনই করি। চল আমরা উঠি আর এখান থেকে চলে যাই।”

Chapter 15

1 2 1আমিই সত্য আঙুরলতা এবং আমার পিতা একজন আঙুর উত্পাদক। 2তিনি আমার থেকে সেই সব ডাল কেটে ফেলেন যে ডালে ফল ধরে না এবং যে ডালে ফল ধরে সেই ডালগুলি তিনি পরিষ্কার করেন যেন তারা আরো অনেক বেশি ফল দেয়। 3 4 3আমি যে বার্তার কথা তোমাদের আগে বলেছি তার জন্য তোমরা আগে থেকেই শুচি হয়েছ। 4আমাতে থাক এবং আমি তোমাদের মধ্যে। যেমন আঙুর গাছের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো ডাল নিজের থেকে ফল দিতে পারে না, তেমনই তোমরা যদি আমার মধ্যে না থাক তবে তোমরাও দিতে পার না। 5 6 7 5আমি আঙুরগাছ; তোমরা শাখা প্রশাখা। যে কেউ আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে, সেই লোক অনেক ফলে ফলবান হবে, যে আমার থেকে দূরে থাকে সে কিছুই করতে পারে না। 6যদি কেউ আমাতে না থাকে, তাকে ডালের মত ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং সে শুকিয়ে যায়; লোকেরা ডালগুলো জড়ো করে সেগুলোকে আগুনের মধ্যে ফেলে দেয় ও সেগুলো পুড়ে যায়। 7যদি তোমরা আমার মধ্যে থাক এবং আমার কথাগুলো যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তবে তোমাদের যা ইচ্ছা চাও এবং আমি তোমাদের জন্য তাই করব। 8 9 8এতে আমার পিতা মহিমান্বিত হন, যদি তোমরা অনেক ফলে ফলবান হও তবে তোমরা আমার শিষ্য হবে। 9পিতা যেমন আমাকে ভালবেসেছেন, আমিও তেমন তোমাদের ভালো বেসেছি; আমার ভালবাসার মধ্যে থাক। 10 11 10তোমরা যদি আমার আদেশগুলি পালন কর, তোমরাও আমার ভালবাসার মধ্যে থাকবে যেমন আমি আমার পিতার আদেশগুলি পালন করেছি এবং তাঁর ভালবাসায় থাকি। 11আমি তোমাদের এই সব বিষয় বলেছি, যেন আমার আনন্দ তোমাদের মধ্যে থাকে এবং তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়। 12 13 12আমার আদেশ এই, যেন তোমরা একে অন্যকে ভালবাসবে, যেমন আমি তোমাদের ভালবেসেছি। 13কারোর এর চেয়ে বেশি ভালবাসা নেই, যে নিজের বন্ধুদের জন্য নিজের জীবন দেবে। 14 15 14তোমরা আমার বন্ধু যদি তোমরা এই সব জিনিস কর যা আমি তোমাদের আদেশ করি। 15বেশিদিন আর আমি তোমাদের দাস বলব না, কারণ, দাসেরা জানে না তাদের প্রভু কি করছে। আমি তোমাদের বন্ধু বলেছি, কারণ আমার পিতার কাছে যা শুনেছি, সবই তোমাদের প্রচার করছি। 16 17 16তোমরা আমাকে মনোনীত কর নি, কিন্তু আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি এবং তোমাদের যাওয়ার জন্য তোমাদের নিয়োগ করেছি এবং ফল বহন কর এবং তোমাদের ফল যেন থাকে। তোমরা আমার নামে পিতার কাছে যা কিছু চাইবে, তিনি তোমাদের তাই দেবেন। 17এই আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি, যে তোমরা একে অন্যকে ভালবাসো। জগত শিষ্যদের ঘৃণা করে। 18 19 18জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে, জেন যে এটা তোমাদের ঘৃণা করার আগে আমাকে ঘৃণা করেছে। 19তোমরা যদি এই জগতের হতে, তবে জগত তোমাদের নিজের মত ভালবাসত; কিন্তু কারণ তোমরা জগতের নও এবং কারণ আমি তোমাদের জগতের বাইরে থেকে মনোনীত করেছি, এই জন্য জগত তোমাদের ঘৃণা করে। 20 21 22 20মনে রেখো আমি তোমাদের যা বলেছি, ‘একজন দাস তার নিজের প্রভুর থেকে মহৎ নয়।’ যদিও তারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে, তারা তোমাদেরও কষ্ট দেবে; তারা যদি আমার কথা রাখত, তারা তোমাদের কথাও রাখত। 21তারা আমার নামের জন্য তোমাদের উপর এই সব করবে, কারণ তারা জানে না কে আমাকে পাঠিয়েছেন। 22আমি যদি না আসতাম এবং তাদের কাছে কথা না বলতাম, তবে তাদের পাপ হত না; কিন্তু এখন তাদের পাপ ঢাকবার কোনো উপায় নেই। 23 24 25 23যে আমাকে ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে। 24যদি আমি তাদের মধ্যে কাজ না করতাম যা অন্য কেউ করে নি, তবে তারা পাপ করত না। কিন্তু এখন তারা আমাকে এবং আমার পিতা উভয়ের আচার্য্য কাজ দেখেছে এবং ঘৃণা করেছে। 25এটা ঘটেছে যে তাদের নিয়মে লেখা এই কথা পূর্ণ হয়েছে: “তারা কোনো কারণ ছাড়া আমাকে ঘৃণা করেছে।” 26 27 26যখন সহায়ক এসেছে, যাকে আমি পিতার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তিনি হলেন সত্যের আত্মা, যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন। 27তোমরাও সাক্ষ্য বহন করবে কারণ তোমরা প্রথম থেকে আমার সঙ্গে আছ।

Chapter 16

1 2 1"আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি যেন তোমরা বাধা না পাও। 2তারা তোমাদের সমাজঘর থেকে বের করে দেবে; সম্ভবত, সময় আসছে, যখন যে কেউ তোমাদের হত্যা করে তোমরা মনে করবে যে সে ঈশ্বরের জন্য সেবা কাজ করেছে। 3 4 3তারা এই সব করবে কারণ তারা পিতাকে অথবা আমাকে জানে না। 4কিন্তু যখন সময় আসবে, যেন তাদের তোমরা মনে করতে পার যে, আমি তোমাদের এই সবের বিষয় বলেছি, সেই জন্য আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি। আমি প্রথম থেকে তোমাদের এই সব বিষয় বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম। পবিত্র আত্মার কাজ। 5 6 7 5তাসত্ত্বেও, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এখন আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি; যদিও তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা কর নি, 'আপনি কোথায় যাচ্ছেন?' 6কারণ আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি বলে তোমাদের হৃদয় দুঃখে পূর্ণ হয়েছে। 7তথাপি, আমি তোমাদের সত্যি বলছি: আমার চলে যাওয়া তোমাদের জন্য ভাল; যদি আমি না যাই, সহায়ক তোমাদের কাছে আসবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠিয়ে দেব। 8 9 10 11 8যখন তিনি আসবেন, সাহায্যকারী জগতকে অপরাধী করবে পাপের বিষয়ে, ন্যায়পরায়নতা বিষয়ে এবং বিচারের বিষয়ে, 9পাপের বিষয়ে, কারণ তারা আমাকে বিশ্বাস করে না; 10ন্যায়পরায়নতা বিষয়ে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি এবং তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; 11এবং বিচারের বিষয়ে, কারণ এ জগতের শাসনকর্তা বিচারিত হয়েছেন। 12 13 14 12তোমাদের বলবার আমার অনেক কিছু আছে, কিন্তু তোমরা এখন তাদের বুঝতে পারবে না। 13তথাপি, তিনি সত্যের আত্মা, যখন আসবেন তিনি তোমাদের সব সত্যের উপদেশ দেবেন; তিনি নিজের থেকে কথা বলবেন না, কিন্তু তিনি যা কিছু শোনেন সেগুলোই বলবেন; এবং যে সব ঘটনা আসছে তিনি সে সব বিষয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন। 14তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমার যা কিছু আছে, সেসব তিনি নিয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন। 15 16 15পিতার যা কিছু আছে সে সবই আমার; তা সত্ত্বেও আমি বলছি যে, আত্মা আমার কাছে যা কিছু আছে, সেসব নিয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন। 16কিছু সময় পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; আবার কিছু সময় পরে, তোমরা আমাকে দেখতে পাবে।" শিষ্যদের দুঃখ আনন্দে পরিবর্তন। 17 18 17তারপর তাঁর কিছু শিষ্য নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, "তিনি আমাদের একি বলছেন, ‘কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না,' এবং আবার, 'কিছু কাল পরে আবার, তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,’ এবং, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি'?" 18অতএব তারা বলল, "এটা কি যা তিনি বলছেন, ‘কিছু কাল'?, আমরা কিছু বুঝতে পারছি না তিনি কি বলছেন।" 19 20 21 19যীশু দেখলেন যে তাঁরা তাঁকে আগ্রহের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে চাইছেন এবং তিনি তাঁদের বললেন, আমি যা বলেছি, "তোমরা কি এটা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছ, যে আমি কি বলেছি, 'কিছু কালের মধ্যে, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; আবার কিছু কাল পরে, আমাকে দেখতে পাবে'? 20সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কাঁদবে এবং বিলাপ করবে, কিন্তু জগত আনন্দ করবে; তোমরা দুঃখার্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে। 21একজন স্ত্রীলোক দুঃখ পায় যখন তার প্রসব বেদনা হয় কারণ তার প্রসব কাল এসে গেছে; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, সে আর তার ব্যাথার কথা কখনো মনে করে না কারণ জগতে একটি শিশু জন্মালো এটাই তার আনন্দ। 22 23 24 22তোমরাও, তোমরা এখনও দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখব; এবং তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হবে এবং কেউ তোমাদের কাছ থেকে সেই আনন্দ নিতে পারবে না। 23ওই দিনে তোমরা আমাকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে না। সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদের বলছি, যদি তোমরা পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি আমার নামে তোমাদের তা দেবেন। 24এখন পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাওনি; চাও এবং তোমরা গ্রহণ করবে সুতরাং তোমরা আনন্দে পূর্ণ হবে। 25 25আমি অস্পষ্ট ভাষায় এই সব বিষয় তোমাদের বললাম, কিন্তু সময় আসছে, যখন আমি তোমাদের আর অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলব না, কিন্তু পরিবর্তে পিতার বিষয় তোমাদের সোজা ভাবে বলব। 26 27 28 26ওই দিন তোমরা আমার নামেই চাইবে এবং আমি তোমাদের বলব না যে, আমি পিতার কাছে তোমাদের জন্য প্রার্থনা করব; 27কারণ পিতা নিজেই তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালবেসেছ এবং কারণ তোমরা বিশ্বাস করেছ যে আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি। 28আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি এবং জগতে এসেছি; আবার একবার, আমি জগত ত্যাগ করছি এবং পিতার কাছে যাচ্ছি।" 29 30 31 29তাঁর শিষ্যরা বললেন, "দেখুন, এখন আপনি সোজা ভাবে কথা বলছেন, আপনি অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলছেন না। 30এখন আমরা জানি যে আপনি সব কিছুই জানেন এবং আপনি দরকার মনে করেন না যে কেউ আপনাকে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। কারণ এই, আমরা বিশ্বাস করি যে, আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন। 31যীশু তাঁদের উত্তর দিলেন, "তোমরা এখন বিশ্বাস করছ?" 32 33 32দেখ, সময় এসেছে, হ্যাঁ, সম্ভবত এসেছে, যখন তোমরা ছড়িয়ে পড়বে, প্রত্যেকে নিজের জায়গায় যাবে এবং আমাকে একা রেখে যাবে। তথাপি আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন। 33তোমাদের এই সব বললাম, যেন তোমরা আমাতে শান্তিতে থাক। জগতে তোমরা কষ্ট পাবে, কিন্তু সাহস কর, আমি জগতকে জয় করেছি।"

Chapter 17

1 2 1যীশু এই সব কথা বললেন; তারপর তিনি তাঁর চোখ স্বর্গের দিকে তুললেন এবং বললেন, "পিতা, সময় এসেছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, যেন তোমার পুত্র তোমাকে মহিমান্বিত করে 2যেমন তুমি তাঁকে সব মানুষের উপরে কর্তৃত্ব দিয়েছ, যাদেরকে তুমি তাঁকে দিয়েছ তিনি যেন তাদের অনন্ত জীবন দেন। 3 4 5 3আর এটাই অনন্ত জীবন: যেন তারা তোমাকে জানতে পারে, একমাত্র সত্য ঈশ্বরকে এবং তুমি যাকে পাঠিয়েছ, যীশু খ্রীষ্টকে। 4তুমি আমাকে যে কাজ করতে দিয়েছ, তা শেষ করে আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি। 5এখন পিতা, তোমার উপস্থিতে আমাকে মহিমান্বিত কর, জগত সৃষ্টি হবার আগে তোমার কাছে আমার যে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় এখন আমাকে মহিমান্বিত কর। যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য প্রার্থনা করলেন। 6 7 8 6জগতের মধ্য থেকে তুমি যে লোকদের আমাকে দিয়েছ আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল এবং তাদের তুমি আমাকে দিয়েছ এবং তারা তোমার কথা রেখেছে। 7এখন তারা জানে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ সে সবই তোমার কাছ থেকে এসেছে, 8তুমি আমাকে যে সব বাক্য দিয়েছ আমি এই বাক্যগুলি তাদের দিয়েছি। তারা তাদের গ্রহণ করেছে এবং সত্যি জেনেছে যে আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি এবং তারা বিশ্বাস করেছে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো। 9 10 11 9আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করি। আমি জগতের জন্য প্রার্থনা করি না কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, কারণ তারা তোমারই। 10সব জিনিস যা আমার সবই তোমার এবং তোমার জিনিসই আমার; আমি তাদের মধ্যে মহিমান্বিত হয়েছি। 11আমি আর বেশিক্ষণ জগতে নেই, কিন্তু এই লোকেরা জগতে আছে এবং আমি তোমাদের কাছে আসছি। পবিত্র পিতা, তোমার নামে তাদের রক্ষা কর যা তুমি আমাকে দিয়েছ যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক। 12 13 14 12যখন আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম আমি তোমার নামে তাদের রক্ষা করেছি যা তুমি আমাকে দিয়েছ; আমি তাদের পাহারা দিয়েছি এবং যার বিনষ্ট হওয়ার কথা ছিল সে বিনাশ হয়েছে, যেন শাস্ত্রের কথা পূর্ণ হয়। 13এখন আমি তোমার কাছে আসছি; কিন্তু আমি জগতে থাকতেই এই সব কথা বলেছি যেন তারা আমার আনন্দে নিজেদের পূর্ণ করে। 14আমি তাদের তোমার বাক্য দিযেছি; জগত তাদের ঘৃণা করেছে, কারণ তারা জগতের নয়, যেমন আমি জগতের নই। 15 16 17 15আমি প্রার্থনা করছি না যে তুমি তাদের জগত থেকে নিয়ে নাও, কিন্তু তাদের শয়তানের কাছ থেকে রক্ষা কর। 16তারা জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই। 17তাদের সত্যে পবিত্র কর; তোমার বাক্য সত্য। 18 19 18তুমি আমাকে জগতে পাঠিয়েছো এবং আমি তাদের জগতে পাঠিয়েছি। 19তাদের জন্য আমি নিজেকে পবিত্র করেছি যেন তারা তাদেরকেও সত্যিই পবিত্র করে। যীশু সমস্ত বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন। 20 21 20আমি কেবলমাত্র এদের জন্য প্রার্থনা করি না, কিন্তু আরও তাদের জন্য যারা তাদের বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাকে বিশ্বাস করবে 21সুতরাং তারা সবাই এক হবে, যেমন তুমি, পিতা, আমার মধ্যে এবং আমি তোমার মধ্যে। আমি প্রার্থনা করি যে তারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে সুতরাং জগত বিশ্বাস করবে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো। 22 23 22যে মহিমা তুমি আমাকে দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, সুতরাং তারা এক হবে, যেমন আমরা এক। 23আমি তাদের মধ্যে এবং তুমি আমার মধ্যে, যেন তারা সম্পূর্ণভাবে এক হয়; যেন জগত জানতে পারে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো এবং তাদের ভালবেসেছ, যেমন তুমি আমাকে প্রেম করেছ। 24 24পিতা, যাদের তুমি আমায় দিয়েছ আমি আশাকরি যে তারাও আমার সঙ্গে থাকে যেখানে আমি থাকি, তুমি আমায় যাদের দিয়েছো, তাহারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে সুতরাং তারা যেন আমার মহিমা দেখে, যা তুমি আমাকে দিয়েছ: কারণ জগত সৃষ্টির আগে তুমি আমাকে প্রেম করেছিলেন। 25 26 25ধার্মিক পিতা, জগত তোমাকে জানে নি, কিন্তু আমি তোমাকে জানি; এবং এরা জানে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো। 26আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রচার করেছি এবং আমি এটা জানাব যে তুমি যে প্রেমে আমাকে প্রেম করেছ, তা তাদের মধ্যে থাকে এবং আমি তাদের মধ্যে থাকি।"

Chapter 18

1 2 3 1পরে যীশু এই সব কথা বলেছিলেন, তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে বেরিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকা পার হয়েছিলেন, সেখানে একটি বাগান ছিল তার মধ্যে তিনি ঢুকেছিলেন, তিনি এবং তাঁর শিষ্যরা। 2এখন যিহূদা , যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেও জায়গাটা চিনত, কারণ যীশু প্রায়ই তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেখানে যেতেন। 3তারপর যিহূদা একদল সৈন্য এবং প্রধান যাজকদের কাছ থেকে আধিকারিক গ্রহণ করেছিল এবং ফরীশীরা লন্ঠন, মশাল এবং তরোয়াল নিয়ে সেখানে এসেছিল। 4 5 4তারপর যীশু, যিনি সব কিছু জানতেন যে তাঁর উপর কি ঘটবে, সামনের দিকে গেলেন এবং তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমরা কাকে খুঁজছো?" 5তারা তাঁকে উত্তর দিল, "নাসরতের যীশুর।" যীশু তাদের উত্তর দিল, "আমি সে।" যিহূদা, যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেও সৈন্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল। John 18:4–5 — বাংলা (ulb) 6 7 6সুতরাং যখন তিনি তাদের বললেন, "আমি হই," তারা পিছিয়ে গেল এবং মাটিতে পড়ে গেল। 7তারপরে তিনি তাদের আবার জিজ্ঞাসা করলেন, "তোমরা কার খোঁজ করছ?" তারা আবার বলল, "নাসরতের যীশুর"।